Advertisement
Advertisement

Breaking News

Migratory birds

ভিলেন দূষণ! তিস্তা থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে পরিযায়ী বিহঙ্গকুল

জলঢাকা, ডায়না, তোর্সা নদীর আশপাশে ডেরা বাঁধছে তারা।

Migratory birds shift themselves from Teesta river belt due to pollution after Sikkim flood | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 21, 2023 5:51 pm
  • Updated:November 21, 2023 5:51 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: উত্তর সিকিমে লোনাক হ্রদে বিস্ফোরণের জেরে হড়পা বানে বিধ্বস্ত তিস্তা নদী (Teesta River)। তবে কি এবার পালটে দিচ্ছে পরিযায়ী বিহঙ্গকুলের ঠিকানা? দূষিত জলের ছোঁয়া মিলতেই কি তিস্তা থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে বিদেশি অতিথিরা? মাঝিমাল্লাদের সূত্রে যে তথ্য সামনে আসছে, তার ভিত্তিতে পাখি বিশেষজ্ঞ মহলে ওই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, কিছু পাখি নামলেও বিপদ বুঝে অল্প সময়ে ঠিকানা বদলে জলঢাকা অথবা তোর্সা নদীতে পাড়ি জমাতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির পাখি বিশেষজ্ঞরা তিস্তায় নজরদারিতে তৎপর হয়েছেন।

হড়পা বানের পর রাসায়নিক দূষণের (Pollution) ফলে উত্তরবঙ্গে নদীগুলির জলে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় বোরোলি-সহ সুস্বাদু মাছের ভাণ্ডার নষ্ট হতেই সম্ভবত পরিযায়ীরা তিস্তায় থাকতে চাইছে না। তার সঙ্গে জুড়েছে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা। শেষের পথে নভেম্বর। তবু উত্তরে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা নেই। ওই কারণে এবার খুব বেশি পরিযায়ী পাখি (Migratory Birds) এখনও আসেনি। যে পাখিরা এসেছে, তারা জলঢাকা, ডায়না, তোর্সা নদী অথবা নারারথলি ও সাতবেকির মতো ঝিলে ডেরা বাঁধতে শুরু করেছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘মানসিকভাবে বাণিজ্য সম্মেলনেই আছি’, BGBS নিয়ে মন্তব্য রাজ্যপালের]  

সাধারণত হেমন্তের ধানখেত সোনালি হতে উত্তুরে হিমেল হাওয়ার ছোঁয়া লাগতে পরিযায়ী পাখিরা দলেদলে পাড়ি দিতে শুরু করে উত্তরের নদী ও জলাশয়ে। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সেটা চলে। তিস্তা, জলঢাকা, মূর্তি, তোর্সা, মহানন্দা নদী, রসিকবিল, সাগরদিঘির মতো জলাশয় মুখরিত হয় পরিযায়ীদের কলতানে। সবচেয়ে বেশি পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে তিস্তার গজলডোবায়। এই সময় পাখিপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস ঘিরে ভিন্ন ধরনের পর্যটনশিল্প বিকাশের সম্ভাবনাও তৈরি হয়। কিন্তু এবার তিস্তায় বিধ্বংসী বন্যা এবং তার জেরে জল দূষণ পুরো ছবি পালটে দিয়েছে। অনেকটাই উঁচু হয়ে যাওয়া তিস্তা বক্ষ কার্যত সুনসান।

পরিস্থিতি দেখে বম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির পাখি বিশেষজ্ঞ সৌম্য চক্রবর্তী জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, বন্যার ফলে বিভিন্ন রাসায়নিক মিশ্রণে তিস্তার জল দূষিত হওয়ায় মাছ-সহ জলজ প্রাণীর ভাণ্ডার নষ্ট হয়েছে। যে এলাকা নিরিবিলি এবং যেখানে পর্যাপ্ত জল, মাছ, জলজ প্রাণীর মতো খাবার রয়েছে পরিযায়ীরা, সেখানেই থাকতে পছন্দ করে। একদিকে তিস্তায় জল কমেছে। অন্যদিকে, খাদ্য সঙ্কটের কারণে হয়ত পরিযায়ীরা মুখ ফেরাতে শুরু করেছে। যদিও তিনি বলেন, “এখনও সময় আছে। জলচর পরিযায়ীরা শীত জাঁকিয়ে না পড়লে আসে না। তাই কয়েকদিন অপেক্ষায় আছি। শীত পড়লেও ওদের দেখা না পেলে কারণ অনুসন্ধান সহজ হবে।”

[আরও পড়ুন: অন্তঃসত্ত্বা হতেই সম্পর্কে দূরত্ব, রাগে লিভ ইন পার্টনারের গোপনাঙ্গ কাটলেন তরুণী!]

পাখিপ্রেমীদের দাবি, এবার তিস্তায় পরিযায়ী পাখির আনাগোনা নেই বললে চলে। শুধু তাই নয়। দ্রুত বদলেছে ওদের শীতকালীন ঠিকানাও। পাখিপ্রেমী রাজা রাউত বলেন, “জলঢাকা-সহ বিভিন্ন নদীতে কমবেশি পরিযায়ী পাখির দেখা মিললেও তিস্তায় নেই। ওই নদীর যে এলাকায় পরিযায়ীরা এই সময় চলে আসে এবার বন্যায় সেখানে পলি ও বালির আস্তরণ জমেছে। মাছও কমেছে।”

এদিকে অতিথি পাখিদের এমন আচরণ পরিবর্তনে ভূগোলের গবেষক মহলে উসকে দিয়েছে প্রশ্ন, তবে কি তিস্তাকে নিরাপদ মনে করছে না বিহঙ্গকুল? তাদের বক্তব্য, পরিযায়ী পাখিরা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। নিরিবিলি জলাশয়, নদী ওদের পছন্দের। ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান মধুসূদন কর্মকার বলেন, “তিস্তার জল যে বসবাস যোগ্য নেই সেটা পরিযায়ীরা বুঝেই হয়তো অন্যত্র চলে যাচ্ছে। বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখা প্রয়োজন।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement