Advertisement
Advertisement
Santragachi waterbody

বাধা দূষণ, সাঁতারগাছিতে কমছে পরিযায়ী পাখি

সাঁতরাগাছি ঝিলে পরিযায়ী পাখির দেখা মেলা ভার।

Migrant birds are now rare in Santragachi waterbody due to pollution
Published by: Paramita Paul
  • Posted:December 2, 2024 9:08 pm
  • Updated:December 2, 2024 9:08 pm  

অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: পরিবেশ দূষণ, প্রচুর বহুতল ও নিকাশি নালা বুজে যাওয়ায় শীতকালে সাঁতরাগাছি ঝিলে পরিযায়ী পাখি আসা কমে গিয়েছে। এখন সাঁতরাগাছি ঝিলে পরিযায়ী পাখির দেখা মেলা ভার। ঝিলের আশপাশে থাকা বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ বছর শীতের আমেজ দেখা দিতেই সপ্তাহখানেক আগে একদিনই ঝিলে পরিযায়ী পাখিদের দেখা মিলেছিল। তাও পুরো ঝিল কচুরিপানায় ভরে থাকায় পাখিরা বসতে পারেনি। কিছুক্ষণ থেকেই উড়ে যায়।

পাখি বিশেষজ্ঞ ও পাখিপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, এখন আর আগের মতো সাঁতরাগাছি ঝিলে পাখি আসে না। বছর দশেক আগেও ৫৩ বিঘের সাঁতরাগাছি ঝিলে ২৫ থেকে ৩০ প্রজাতির পাখি আসত। শীতে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার পাখির দেখা মিলত সাঁতরাগাছি ঝিলে। সাঁতরাগাছি ঝিলের পাখি নিয়ে রীতিমতো গবেষণা হত। কিন্তু সেসব এখন অতীত। গত কয়েকবছরে দেখা গিয়েছে, ডিসেম্বরের শেষ কিংবা জানুয়ারির শুরুতে সরাল প্রজাতির পাখিই বেশি আসে এখানে। এছাড়া অন্য প্রজাতির পাখি তেমন একটা চোখে পড়েনি পক্ষী বিশেষজ্ঞদের। পক্ষীপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, কয়েক বছর আগেও এই সাঁতরাগাছি ঝিলে পিন্টেল, গ্ল্যাডওয়াল, করমোরেন্ট, পন্ড হেরন, ইন্ডিয়ান মুর হেন, কটন টিল, ফেরুজিনিয়াস ডাক, লেজার হুইসলিং টিলের মতো পরিযায়ী পাখি আসত। কিন্তু বর্তমানে এসব পাখি প্রায় দেখাই যাচ্ছে না। আগে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাঁতরাগাছি ঝিলে পাখির মেলা বসে যেত। এখন হাতেগোনা পাখি আসছে এখানে। তাও অনেকদিন পর পর।

Advertisement

কিন্তু কেন পরিযায়ী পাখিরা সাঁতরাগাছি ঝিল থেকে মুখ ফেরাল?
এর উত্তরে স্থানীয় বাসিন্দা পক্ষী প্রেমী গৌতম পাত্র জানালেন, পাখি না আসার অন্যতম প্রধান কারণ পরিবেশ দূষণ। এছাড়া সাঁতরাগাছি ঝিলের ধারে অনেক বহুতল হয়ে গিয়েছে। এই বহুতলের বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের জন্য কোনও উপযুক্ত নালা নেই। ফলে বহুতলের বর্জ্য গিয়ে পড়ছে ঝিলের জলে। যার জেরে ঝিলের জল দূষিত হয়ে পাখিদের ঝিলে আসার পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছে। এছাড়া ঝিলের দূষিত জল বেরোনোর জন্য যে মূল নিকাশি নালা রয়েছে তা বুজে গিয়েছে। ফলে ঝিলের দূষিত জল বেরোতে না পেরে এর পরিবেশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যা পাখিদের ঝিলে এসে বসার জন্য প্রধান অন্তরায়। প্রকৃতি সংসদের সম্পাদক সৌম্য রায় জানালেন, আগে ভারতবর্ষের ভিনরাজ্য এমনকী বিদেশ থেকেও প্রচুর পাখি আসত এখানে। গত কয়েক বছরে তেমন পাখি আর আসেনি। আর এ বছরও তেমন পাখি সাঁতরাগাছি ঝিলে আসবে বলে মনে করছেন না তিনি। তাঁর কথাতে দূষণের জন্যই পাখিরা আসছে না ঝিলে। বিলুপ্তির পথে সাঁতরাগাছি ঝিল বা পাখিরালয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের রেল দপ্তর সাঁতরাগাছি ঝিলে দ্বীপ তৈরি করে পাখিরালয় তৈরির পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে এই ঝিল পাখিরালয় হয়। আগে রাজ্য সরকারের বনদপ্তর এই ঝিলের রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল। কিন্তু বর্তমানে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই ঝিলের দেখাশোনা করে। শীতের আগে ঝিলে ভরে যাওয়া কচুরিপানা সরিয়ে দ্বীপ তৈরি করে পাখিদের আসার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে এই সংস্থা। সাঁতরাগাছি ঝিলে আবার আগের মতো হাজার হাজার পাখি আসুক। প্রকৃতি সুন্দর হয়ে উঠুক এমনটাই চাইছেন আশপাশের মানুষজন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement