সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিপদ একেবারে শিয়রে। এই সপ্তাহেই তা ধেয়ে আসছে। বেলজিয়ামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা বলছে, গ্রিনল্যান্ড (Greenland) অর্থাৎ মেরুবলয়ের বরফগলন এতটাই দ্রুত হারে ঘটবে, আমেরিকার ফ্লোরিডা ২ ইঞ্চি জলের নিচে ডুবে যাবে। হিসেব অনুযায়ী, ১২ গিগাটন বরফ গলতে পারে এই অল্প সময়ের মধ্যে। সমীক্ষকদের চুলচেরা হিসেব আরও বলছে, শুধুমাত্র গত বুধবারই গলেছে ২২ গিগাটন বরফ। ২০১২, ২০১৯ এর পর এবারই প্রথম একসঙ্গে গ্রিনল্যান্ডে এত পরিমাণ বরফগলনের রেকর্ড তৈরি হল।
এত পরিমাণ বরফ জলে পরিণত হওয়ার কারণে উত্তর গ্রিনল্যান্ডের তাপমাত্রা একলাফে বেড়েছে অনেকটা। ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে তা পৌঁছেছে ২৩.৪ ডিগ্রিতে, যা গ্রীষ্মের সাধারণ তাপমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ। বেলজিয়ামের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ জেভিয়ার ফেটওয়েস জানাচ্ছেন, এর আগে তুষারপাতের সময় অন্তত ১০ গিগাটন বরফ ফের জমাট বেঁধে গিয়েছিল। তাই গলনের ভাগ ততটা বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি। উষ্ণায়নের প্রভাবে মেরু এলাকার আবহাওয়ায় যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। কিন্তু সেই বদল কীভাবে ঘটছে এবং কী কী ঘটছে, সেটাই এই মুহূর্তে গবেষণার বিষয় পরিবেশ বিজ্ঞানীদের কাছে। সেই গবেষণা অনুযায়ী, মেরুপ্রদেশের সাগরের উপর উষ্ণ হাওয়া এমনভাবে জমছে, যা বরফগলনের পক্ষে আদর্শ। সম্প্রতি তারই প্রভাবে এই পরিমাণ তুষার তরলে পরিণত হচ্ছে, যা ফ্লোরিডাকে (Florida) ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
আন্টার্কটিকার পর গ্রিনল্যান্ডই মেরুপ্রদেশের সেই জায়গা, যা স্থায়ীভাবে তুষার চাদরে আবৃত থাকে। শুধু তাই নয়, বিশ্বের ৭০ শতাংশ টাটকা জল (fresh water) সরবরাহ করে এখানকার গলে যাওয়া বরফ। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, ১৯৯০ সাল থেকে বিশ্ব উষ্ণায়নের (Global warming) জেরে এখানকার বরফ গলতে শুরু করে। ২০০০ সালে সেই গলনের যে হিসেব পাওয়া গিয়েছিল, সম্প্রতি গলনের হার তার প্রায় ৪ গুন। অর্থাৎ মাত্র ২০ বছরেই গলন হয়েছে দ্রুত হারে। এই হারে তা চলতে থাকলে গ্রিনল্যান্ডে সমস্ত তুষারগলনের পর সমুদ্রের জলতলের উচ্চতা অন্তত ৬ থেকে ৭ মিটার বেড়ে যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.