সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যত দিন যাচ্ছে, প্রতিবেশী গ্রহ সম্পর্কে সমস্ত গোপন কথা প্রকাশ্যে আসছে। সৌজন্যে বিজ্ঞানীদের নিরলস পরিশ্রম আর কৌতূহল। নাসার মঙ্গলযান ‘কিউরিওসিটি’র পাঠানো পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে লাল গ্রহ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জানালেন নয়া তথ্য। ৪০০ কোটি বছর আগে নাকি ভয়াবহ হড়পা বানে ভেসে গিয়েছিল মঙ্গলের (Mars) জমি। তাতেই তৈরি হয়েছে পলিস্তর, বিশাল গহ্বর (Gale Crater)। তারপর সেখানে বরফপাত। মঙ্গলের ভূপ্রকৃতি সম্পর্কে প্রথমবার এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে এল, যা লাল গ্রহ সংক্রান্ত গবেষণাকে নতুন পথে চালিত করতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।
মঙ্গলকে জানার জন্য ২০১১ সালে মঙ্গলযান ‘কিউরিওসিটি’ পাঠিয়েছিল নাসা। সেই থেকে প্রায় একদশক ধরে কাজ করে চলেছে ‘কৌতূহলী’ যানটি। মঙ্গলের মাটিতে পলিস্তর সংক্রান্ত কিছু পরিসংখ্যান বিজ্ঞানীদের হাতে এসেছিল। তা বিশদে বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা অতীতে মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে আরও নিশ্চয়তা প্রকাশ করছেন।
বলা হচ্ছে, ৪০০ কোটি বছর আগে মঙ্গল ভয়াবহ হড়পা বান (Flash Flood) এসেছিল। সেই তাণ্ডবের পর ধীরে ধীরে শীতল হতে থাকে মঙ্গলের জমি। বরফপাত হয়। ঘনীভূত হয়ে আসে বাতাস। এরপর আবার এক ধূমকেতুর ধাক্কায় সেই শীতলভাব কেটে যায়। বরফের জমি থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন গ্যাসের উৎপত্তি হয়। এরপর গ্যাসের ভাণ্ডারে পরিণত হয় লাল গ্রহ। আজকের উষ্ণ অবস্থার জন্য সেটাই দায়ী।
আর মঙ্গলের এই রূপান্তরের সঙ্গে ২০ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীর উৎপত্তির মিল রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আলবার্তো জি ফেয়ারেন বলছেন, “রোভার কিউরিওসিটি যে পরিসংখ্যান পাঠিয়েছিল পলিস্তরের, সেই পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখে আমরা প্রথমবার মঙ্গলে বন্যার ইঙ্গিত পেলাম।” জল, কার্বন-ডাই-অক্সাইডে সমৃদ্ধ গ্রহটিতে যে তখন বৃষ্টি হতো, সেই বৃষ্টির জেরেও বান আসতে পারে বলে ধারণা আরেকাংশের। তবে তখনকার পরিবেশ যেমনই থাকুক মঙ্গলে, প্রাণের অস্তিত্ব যে ছিল, সে বিষয়েও প্রায় নিশ্চিত সকলে। কিউরিওসিটির কৌতূহলী দৃষ্টি মঙ্গলের গহ্বর থেকে আরও কী রহস্য তুলে আনে, সেটাই দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.