সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গল নিয়ে মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। চাঁদ তো তবু রূপকথায় ধরা দেয়। কিন্তু মঙ্গল সেখানেও নিজের অস্তিত্ব জাহির করতে পারেনি। সৌন্দর্যের নিরিখে বরাবরই পিছিয়ে পড়েছে মঙ্গল। তার উপর বিজ্ঞানীরাও সেভাবে এই লাল গ্রহকে নিয়ে স্বচ্ছ্ব কোনও ধারণা এখনও দিতে পারেনি। যতটুকু জানা গিয়েছে আজ পর্যন্ত, তাতে মঙ্গল মানেই ঠান্ডা, মরুভূমি সদৃশ একটি গ্রহ। তবে মঙ্গলের এমন দশা কিন্তু বরাবর ছিল না।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কোটি কোটি বছর আগে মঙ্গল ছিল পৃথিবীর মতোই। তাতে জল ছিল। শ্বাস নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেনও ছিল। তখন আর এখনের মধ্যে পার্থক্য হল বায়ুমণ্ডল। এখন এই লাল গ্রহের বায়ুমণ্ডল একসময় বেশ পুরু ছিল। এখন তা অত্যন্ত পাতলা হয়ে এসেছে। তখন মঙ্গলে জলের অস্বিত্ব ছিল। ফলে প্রাণের অস্বিত্ব থাকাও অসম্ভব ছিল না। আর যদি সত্যিই কোনওদিন মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব থেকে থাকে, তাহলে বিজ্ঞানের জন্য সেটি হবে যুগান্তকারী ঘটনা। তাই বিজ্ঞানীরা এখন মঙ্গলের এই পুরনো বায়ুমণ্ডল নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন।
বিজ্ঞানীদের মতে, অক্সিজেনের আইসোটোপ এই বায়ুমণ্ডল পরিমণ্ডলের জন্য দায়ী। একই অনুর মধ্যে নিউট্রন আলাদা হলে আইসোটোপ তৈরি হয়। যদি কোনও অণুর আইসোটোপ ভারী হয়, তবে সেটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে থেকে যায়। আইসোটোপ হালকা হলে সেটি মহাশূন্যে বিলিন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। পৃথিবীর সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় মঙ্গলে ভারী আইসোটোপের পরিমাণ ছিল বেশি। সব মিলিয়ে মঙ্গল একসময় বসবাসের যোগ্য ছিল। লাল গ্রহে অক্সিজেনের যেমন অস্তিত্ব ছিল, তেমনই জলের অস্তিত্বও ছিল। এসব নিয়েই এখন গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। মনে করা হচ্ছে, মঙ্গলের আবহাওয়া কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, তা এই গবেষণার মাধ্যমে বোঝা যাবে। এছাড়া মঙ্গলে কিছু শুকনো নদীখাত ও কিছু কিছু খনিজ পদার্থ পাওয়া গিয়েছে। তাতে বিজ্ঞানীদের ধারণা হয়েছে একসময় এখানে জলের অস্তিত্ব ছিল। আর যদি জল থেকে থাকে মঙ্গলে তবে প্রাণের অস্তিত্বও অস্বাভাবিক নয়। এখন সেদিকেই শ্যেনদৃষ্টি বিজ্ঞানীদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.