Advertisement
Advertisement

Breaking News

Sleep

ঘুমের মধ্যেও দুজনের বার্তা বিনিময় সম্ভব! গবেষণার ফল দেখে দাবি বিজ্ঞানীদের

ক্যালিফোর্নিয়ার এক স্টার্টআপ সংস্থা পরীক্ষামূলকভাবে এই গবেষণা করে। এই চমকপ্রদ বিষয়টি আবিষ্কারের পর তাঁরা মনে করছেন, আরও অনুসন্ধান প্রয়োজন।

Man can communicate even during sleep, claim scientists from a research

অলংকরণ: সোমশ্রী দাস।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 15, 2024 2:45 pm
  • Updated:October 15, 2024 2:48 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সচেতন মস্তিষ্ক স্বপ্ন দেখে না। কেবল অবচেতনেই তা সম্ভব। কিন্তু ঘুমের গভীরে, স্বপ্ন দেখতে দেখতেও যে দুজন মানুষের মধ্যে বার্তা বিনিময় করা যায়, তা এতদিন ছিল অজ্ঞাত এবং অশ্রুত। কারণ, এমন কিছু আগে কখনও ঘটেনি। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির কেরামতি সেই অসাধ‌্য সাধনই করে দেখিয়েছে। এই প্রথম স্বপ্নের জগতে বিচরণ করতে করতে দুজন মানুষ আক্ষরিক অর্থেই নিজেদের মধ্যে বার্তা আদানপ্রদান করেছেন। আর বিশেষভাবে তৈরি কিছু যন্ত্র যেমন সেন্সর, ওয়াইফাই, সার্ভার প্রভৃতি প্রমাণস্বরূপ তা ‘ধরে রেখেছে’।

পরীক্ষামূলক এই উদ্যোগ ছিল ক‌্যালিফোর্নিয়ার একটি স্টার্ট আপ সংস্থার। নাম ‘আরইএমস্পেস’। এরা সাধারণত এমন প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করে, যা মানুষের নিশ্চিন্ত এবং নিরুপদ্রব ঘুম নিশ্চিত করে। পাশাপাশি সাহায‌্য করে স্বচ্ছ এবং প্রাঞ্জল স্বপ্ন দেখতেও। নির্বিঘ্নে ঘুম হলে যা সম্ভব। গত ২৪ সেপ্টেম্বর এই স্টার্টআপ সংস্থাই উদ্যোগ নিয়ে দুজনকে বাছাই করেছিল, তাদের স্বপ্ন-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে। নির্বাচিতদের মধ্যে ‘কমন ফ‌্যাক্টর’ ছিল একটাই। তাঁরা ‘স্বপ্ন-সচেতন’। অর্থাৎ ঘুমের গভীরে স্বপ্ন দেখতে দেখতেও এঁরা সচেতন থাকেন। এই সত‌্য সম্পর্কে অবহিত থাকেন যে, স্বপ্ন দেখছেন। স্বপ্নের পরিভাষায় একে ‘লুসিড ড্রিমিং’ বলা হয়। ঘুমের আরইএম (র‌্যাপিড আই মুভমেন্ট) ধাপে এই ঘটনা ঘটে। বিজ্ঞানীরা বলেন, এই সময় মানব-মস্তিষ্ক সবচেয়ে সক্রিয় থাকে। ফলে স্বপ্নগুলিও স্পষ্ট এবং প্রাঞ্জল হয়।

Advertisement

সংস্থার দাবি, বাছাই করা দুজনকে প্রথমে ঘুমিয়ে পড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে যেখানে-সেখানে নয়। গবেষণাগারে নির্দিষ্ট শয়নকক্ষে, যেখানে আগে থেকেই নানা ধরনের বিশেষ বিশেষ যন্ত্রপাতি লাগানো ছিল। এই সমস্ত যন্ত্রের মাধ‌্যমে তাঁদের ‘ব্রেন ওয়েভ’ এবং অন‌্যান‌্য ‘পলিসোমনোগ্রাফিক ডেটা’ সংগ্রহ করে তা সরাসরি আরইএম-স্পেস সিস্টেমের কেন্দ্রস্থিত একটি সেন্ট্রাল সার্ভারে পাঠানো হচ্ছিল। বিজ্ঞানীরা তা দেখেই দু’জনের ‘স্লিপ প‌্যাটার্ন’ পর্যবেক্ষণ করছিলেন। নির্দেশ অনুযায়ী, দুই ব‌্যক্তি ঘুমিয়ে পড়লে অপেক্ষা শুরু হয় তাঁদের স্বপ্ন দেখা শুরু হওয়ার।

প্রথমে একজন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। যন্ত্র বিজ্ঞানীদের আভাস দেয়, তাঁর স্বপ্নের বিষয়বস্তু কী, তা নিয়ে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসে একটি অভিনব শব্দ ‘জিলাক’ (Zhilak)। ‘Remmyo’ ভাষায় অনুদিত এই শব্দটিকে বার্তা হিসাবে সেই ব‌্যক্তিকে প্রেরণ করা হয়। ফিসফিস করে শব্দটি বলা হয় তাঁর কানের কাছে। প্রথমজন সেটি শোনেন এবং জোরে বলে ওঠেন। তাঁর কণ্ঠস্বর সঙ্গে সঙ্গে সেন্সর রেকর্ড করে নেয় এবং সার্ভারে পৌঁছে দেয়। আট মিনিট পর দ্বিতীয় ব‌্যক্তি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ঠিক সময় বুঝে, সার্ভার সেই ‘জিলাক’ শব্দটিকে তাঁর কানের কাছাকাছি বার্তা হিসাবে প্রেরণ করে। দ্বিতীয় জন তা শোনেন এবং বলে ওঠেন। আর এইভাবেই সম্পূর্ণ হয় বার্তা আদানপ্রদানের পালা।

পরীক্ষাপর্ব শেষ হলে দু’জনকেই ঘুম থেকে তোলা হয়। জিজ্ঞাসা করা হয়, ঘুমের মধ্যে প্রেরিত বার্তা সম্পর্কে। দুজনেই জানান, তাঁরা স্বপ্নের মধ্যে ‘জিলাক’ শব্দটি শুনেছেন। ‘আরইএমস্পেস’ জানিয়েছে, তারা তাদের পরীক্ষার বিষয়বস্তু অন‌্যান‌্য বিজ্ঞানীদেরও পাঠিয়েছেন। সার্বিক অনুমোদন পেলে তাঁদের গবেষণা ‘স্লিপ-সায়েন্স’-এর ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক ধাপ হিসাবে গণ্য করা হবে। তবে আপাতত এনিয়ে আরও অনুসন্ধান চালানো প্রয়োজন বলেই মত তাঁদের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement