সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাখিদের পাঠশালায় গান শেখাত নাকি কোকিল। কিন্তু প্রকৃতির পাঠশালায় পাখিরা গান শিখে নেয় প্রকৃতির কাছেই। আর তারপর নিরন্তর অনুশীলন। অবাক হচ্ছেন তো? ভাবছেন, পাখিদের আবার অনুশীলন? আপনি চমকে গেলেও, এটাই কিন্তু খাঁটি বাস্তব। সম্প্রতি এক সমীক্ষা বলছে, লকডাউনে (Lockdown) চারপাশ শুনশান হয়ে যাওয়ায় প্রকৃতির অনেকটা কাছাকাছি থাকত পেরে সান ফ্রান্সিসকো শহরের পুরুষ পাখিরা (Male Birds) নাকি দারুণ অনুশীলন করে ফেলেছে। তাদের সেই সংগীতের টান উপেক্ষাই করতে পারবে না সঙ্গীরা। আগ্রহী হবেই যৌনমিলনে।
আমেরিকার টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Tennessee) তরফে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। তাতেই বিশদে দেখানো হয়েছে, লকডাউনের কয়েকটা মাস কীভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেদের গায়কীর (Singing skills) বদল ঘটিয়েছে পুরুষ পাখিরা। কারও গান পরিবেশনের ধরন বদলেছে, কেউ বা সুর-তাল-ছন্দের দিকে আরও মনোযোগী হয়েছে, কেউ নিজেদের সুরও পালটে ফেলেছে। সমীক্ষা বলছে, চড়ুইয়ের দল এখন একটু নিচু স্বরে, শান্তভাবে গাইছে। তাতে তাদের সুর আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
এই গবেষণার নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক এলিজাবেথ ডেরিবেরির কথায়, ”শহর যখন ভিড়ে ঠাসা থাকে, তখন ওদেরও অনেক উচ্চগ্রামে গাইতে হয়। যেমন, আপনি যখন কোনও পার্টিতে গিয়ে কথা বলেন, তখন তো একটু উঁচু স্বরেই বলতে হয়।” কিন্তু লকডাউনের জেরে বেশিরভাগ শহরই নিঃঝুম হয়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে নিজেদের সুরও মানানসই করে ফেলেছে পাখির দল।
শুধু পাখিই বা কেন, লকডাউনের নিস্তব্ধতাকে নাকি কণ্ঠস্বর বদলের কাজে লাগিয়েছে জলের তিমি থেকে রোজকার চেনা পাখি সকলেই। কারও কণ্ঠস্বর ক্ষীণ হয়েছে, কারও বা বেশি সুরেলা। আসলে সবটাই পরিবেশ বদলের উপর নির্ভর করে। শব্দদূষণকে নিত্যসঙ্গী করে ফেলা পাখিরা এতদিন নিজেদের সুরচর্চায় তেমন জোর দিতে পারেনি। বরং উঁচু স্বরে সঙ্গীদের ডাকাডাকিই ছিল দস্তুর। কিন্তু লকডাউনে পরিবেশ পালটে যাওয়ায় ওদের অবকাশও বেড়েছে।
পক্ষীবিদ এলিজাবেথ ডেরিবেরি বলছেন, “স্ত্রী পাখিদের কাছে নিজেদের আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য ওদের এই অনুশীলন। এখন ওদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আরও বাড়ল। তবে আমরা অবাক যে এত অল্প সময়ের মধ্যে পরিবেশ বদলের সঙ্গে সঙ্গে ওরা নিজেদের এতটা বদলে ফেলতে পারল।” তবে কারও কারও স্বরের ওঠানামায় তেমন বদল আসেনি বলেও উল্লেখ রয়েছে গবেষণাপত্রে। যেমন, সাধারণ চড়ুইয়ের ডাক আগের তুলনায় এখন দ্বিগুণ জোরে শোনা যায়। অর্থাৎ এরা নিজেদের স্বরের তীব্রতা কমায়নি। সে যাই হোক, নিয়মিত গলা সাধায় তার মানই তো পালটে গিয়েছে। এখন স্ত্রী পাখিদের কাছে টানতে কিন্তু আরও জোরদার লড়তে হবে পুরুষ পক্ষীকুলকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.