অরূপ বসাক, মালবাজার: গত দু-তিনদিন ধরে পাখিদের মৃত্যু মালবাজার মহকুমার দক্ষিন ওদলাবাড়ি এলাকায়। নিত্যদিন পাখির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। এর আগে কখনও এভাবে একের পর এক পাখির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি এলাকায়। ইতিমধ্যে শালিখ, কাক, বক, চড়ুই পাখির মৃত্যু হয়েছে এখানে। একেক দিন ৭ থেকে ১০ টি পাখির প্রাণহানি ঘটেছে। গত তিনদিনে ৩৫ টি পাখির মৃত্যু হয়েছে। উদ্বিগ্ন জেলার পক্ষীপ্রেমীর দল, চিন্তার ভাঁজ এলাকাবাসীর কপালেও।
এলাকার গ্রামীণ চিকিৎসক রুসসাদ আলমের কথায়, “এইভাবে এত পাখির মৃত্যু আমরা এই এলাকায় আগে দেখিনি। আমার মনে হয়, কোনও বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে এই পাখিগুলির। কারণ, বাড়ির পাশে কৃষিজমিতে আলু চাষ করেছে কৃষকেরা। আর সেই আলুতে কীটনাশক দেওয়া হয়েছে। তাতে মারা গিয়েছে পোকামাকড়। আর ওই পোকামাকড় খেয়ে মৃত্যু হতে পারে এই পাখিগুলোর। প্রতিটি পাখিকেই কৃষিজমির পাশে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। গ্রামের মানুষজন অসুস্থ পাখিদের অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেনি।” এলাকার বাসিন্দা শংকর ছেত্রী বলেন, “আমার জমির পাশে কয়েকজন কৃষক আলু, সরষে লাগিয়েছে। সম্ভবত জমির ফসল বাঁচাতে কীটনাশক দেওয়া হয়েছিল। অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এইসব পাখিদের মৃত্যু হতে পারে।”
এলাকার পরিবেশপ্রেমী সংগঠন নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটির সম্পাদক নফসর আলি জানিয়েছেন যে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তাঁরা। কীটনাশকেই এই পাখিগুলোর মৃত্যু হয়েছে। হয়তো কৃষকদের অজান্তেই বেশি মাত্রায় কীটনাশক দেওয়া হয়েছে এইসব চাষের জমিতে। আর সেই কারণেই এভাবে পাখির মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এব্যাপারে বন দপ্তরের সঙ্গে কথা বলা দরকার, যাতে পাখিদের বাঁচানো যায়। তাঁর ধারণা, বিষাক্ত পোকামাকড় খেয়ে বেশিরভাগ পাখি হৃদঘাত বন্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। তারঘেরা বন দপ্তরের রেঞ্জার শুভজিত মৈত্র আশ্বাস দিয়েছেন, কীভাবে এই পাখিদের মৃত্যু হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.