সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কঠিন বর্জ্যপদার্থ (Solid Waste) পুড়িয়ে পরিচ্ছন্নতায় জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই পোড়ানোর জেরেই স্রেফ এক সপ্তাহের মধ্যে কেরলের কোচি শহর কার্যত ‘গ্যাস চেম্বারে’ (Gas Chamber) পরিণত হল। গলগল করে ছড়িয়ে পড়ছে ঘন সাদা ধোঁয়া। আর সেই ধোঁয়ায় রাস্তায় বেরলেই তীব্র শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন কোচির (Kochi) বাসিন্দারা। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে কেরল সরকারের পরামর্শ, সকলে N95 মাস্ক ব্যবহার করুন। খুব দরকার না হলে বাইরে বেরবেন না। এসব শুনে বাসিন্দারা বলছেন, এ তো লকডাউনের মতো পরিস্থিতি!
কোচির ব্রহ্মপুরমে সেখানকার আবর্জনা ফেলার সবচেয়ে বড় জায়গা। শহরের সমস্ত জঞ্জাল (Waste) এখানেই স্তূপীকৃত হয়। এরপর তা পরিচ্ছন্ন করা হয়। কিন্তু এবার আবর্জনা সাফাই করতে গিয়ে সেখানে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন কর্মীরা। কিন্তু বুঝতেই পারেননি যে কীভাবে তা মূর্তিমান বিপদ হয়ে উঠবে। সেই যে জঞ্জালস্তূপ থেকে ধোঁয়া (Smoke) বেরতে শুরু করল, তাতেই ছেয়ে গেল প্রায় গোটা শহর। আর দূষণ ছড়াল ব্যাপক মাত্রায়। যেখানে দূষণ (Pollution) রুখতেই আবর্জনা পোড়ানোর রাস্তায় হেঁটেছিলেন সাফাইকর্মীরা, সেই পদ্ধতিই ব্যুমেরাং হয়ে উঠল কোচিতে।
জানা যাচ্ছে, ৫০,০০০ টন বর্জ্যপদার্থে আগুন লাগানো হয়েছিল। তাতে প্লাস্টিক, ধাতু সবই ছিল। ফলে যা হওয়ার তাই। সেসব পুড়ে তীব্র বিষধোঁয়া ছড়াচ্ছে বাতাসে। ধূলিকণায় তা মিশে প্রভাব ফেলছে মানুষের উপর। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলের ৩০টি বাহিনী কাজ করছে। জল ছোঁড়া হচ্ছে চপার থেকেও। তবু পরিস্থিতি আয়ত্তে আসছে না। গোটা শহরের ৭০ শতাংশ এলাকায় জ্বালায় জর্জরিত। দেখা যাচ্ছে, ছোট থেকে বড় সকলেই কমবেশি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। শুধু এই সমস্যাই নয়। প্রবল ধোঁয়ায় কারও চোখ জ্বালা, কারও গলা জ্বালা, কারও ত্বকে র্যাশ, এমনই নানাবিধ সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বয়স্ক এবং শিশুদের বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে প্রশাসন।
লিজ বিজু নামে এক কলেজছাত্রের বাড়ি এই আবর্জনা স্তূপের খুব কাছে। এই দুঃসহ পরিস্থিতিতে নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি বলছেন, ”প্রথমদিকে কোনও সমস্যা হচ্ছিল না। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, আমাদের বাড়িটা ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে। আমাদের থাকাই কষ্টকর হয়ে উঠছে। আমার এক বন্ধু তো গতরাতে মাস্ক পরেই ঘুমিয়েছে। শুধু তো ধোঁয়া নয়, সঙ্গে তীব্র দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে।” এই পরিস্থিতির জন্য কোচি পুর প্রশাসনকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে কেরল হাই কোর্ট (Kerala High Court)। জনস্বাস্থ্য নিয়ে এমন গাফিলতিতে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.