সৌরভ মাজি, বর্ধমান: জলাশয় ভরাট করা নিয়ে উত্তপ্ত বর্ধমানের গোদা এলাকা। রেনেশাঁ উপনগরীর একটি জলাশয় ভরাটের জন্য গত দু’দিন ধরে পাম্প দিয়ে জল নিষ্কাশন করা হচ্ছিল। তা টের পেয়েই রুখে দাঁড়ান। পাম্প বন্ধ করে দেন তাঁরা। পাশাপাশি নির্মাণকারী সংস্থার আধিকারিককে ঘিরে ধরে বিক্ষোভও দেখানো হয়। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, জলাশয়টি ভরাট করা যাবে না কোনওভাবেই।
রেনেশাঁ উপনগরীর আবাসিকরা জানিয়েছেন, কেউ ৫ বছর আগে, কেউ বা ৭ বছর আগে জমি কিনেছেন বা বাংলো কিনে এখানে বসবাস করছেন। তাঁদের দাবি, জমি বা বাংলো কেনার সময় তাঁদের জানানো হয়েছিল যে নাগরিক পরিষেবা যথাযথ থাকবে। জলাশয় থাকবে।সেইমতো একটি বড় জলাশয়ও রয়েছে এখানে। কিন্তু সেটিকেই ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি এই জলাশয়টি বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করেন তাঁরা। শীতে পরিযায়ী পাখির দলও আসে।
আবাসিক তনয়া ঘোষপাল বলেন, “এখানে যখন জমি বা বাংলো কিনেছিলাম, তখন জানানো হয়েছিল যে জলাশয়টি থাকবে। এই জলাশয়টির সৌন্দর্যায়নের জন্য বলা হলেও,তা করা হয়নি। উলটে এখন সেটিকে বুজিয়ে দিতে চাইছে। কয়েকদিন ধরে পাম্প লাগিয়ে জল টেনে দেওয়া হচ্ছে। ভরাট করায় ছোট হয়ে গিয়েছে জলাশয়। তারই প্রতিবাদ করেছি আমরা।” আরেক আবাসিক শিশিরকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এই জলাশয়ের জল সকলেই ব্যবহার করেন বিভিন্ন সামাজিক প্রয়োজনে। এত বড় পুকুর এলাকায় কম রয়েছে। বিদেশি পাখিও আসে শীতকালে। আচমকাই পাম্প চালিয়ে জল টেনে ভরাট করে বাংলো করতে চাইছে। সংস্থার আধিকারিকদের ফোন করলেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।” আবাসিক সংগঠনের সভাপতি লালবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “আমরা বাংলো বা জমি কেনার সময় রেনেশাঁ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল জলাশয়, ডেইলি মার্কেট করে দেবে। কিছুই হয়নি। বড় পাম্প চালিয়ে জল বের করে দিয়ে আবাসন ও রাস্তা গড়ছে। আমরা প্রতিবাদ করছি। পরিবেশ রক্ষায় আমরা লড়ব।”
শুক্রবার আবাসিকদের প্রতিবাদ আন্দোলনের সময় এসেছিলেন রেনেশাঁর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক দেবাশিস চক্রবর্তী। তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ চলে। তুমুল বাগবিতণ্ডাও হয় আবাসিকদের। তিনি অবশ্য পালটা দাবি করেছেন, জলাশয় বোজানো হচ্ছে না। কিন্তু জলাশয়ের জল কিছুটা বের না করলে রাস্তা গড়া যাবে না। তাঁর এই বক্তব্য মানতে চাননি আবাসিকরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, কর্তৃপক্ষ জলাশয় বোজানোর কাজ অবিলম্বে বন্ধ না করলে ‘দিদিকে বলো’য় অভিযোগ জানিয়ে সেই ব্যবস্থা করা হবে।
ছবি: মুকুলেসুর রহমান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.