সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিন তার বাঁকা কথার শাসানি শুনেছেন অনেক রাষ্ট্রনেতা। এবার শুনল ভারতও। সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে কিশোরী পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ভারতকে বার্তা দিয়ে বলল, ”বিজ্ঞানের কথা শুনে চলো।” সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের শেষ দিন তাকে সাংবাদিকরা নানা প্রশ্ন করেন। তারই মধ্যে একটি ছিল ভারতকে নিয়ে তার মনোভাব। তাতেই গ্রেটার উত্তর, ”বিজ্ঞানের কথা শুনে চলতে হবে। অন্যান্য জায়গার মতো আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব একইভাবে ভারতেও পড়বে। তাই আগে থেকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।”
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে, পরিবেশ রক্ষা করে সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে পেতে চলতি সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে মিলিত হয়েছিলেন বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানরা। গত কয়েক বছর ধরে পরিবেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে সতর্কতামূলক প্রচার করে রীতিমতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠা সপ্তদশী গ্রেটাও আমন্ত্রিত ছিল সেখানে। নানা জনের নানা কথা শোনার পর শেষদিন সুইস স্কি রিসর্টে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তার অভিজ্ঞতার কথা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সে বেশ বিরক্তির স্বরেই উত্তর দেয়, ”দাভোসে আমরা খুব কম চাহিদা নিয়ে এসেছিলাম। যথারীতি সেগুলো উপেক্ষিতই থেকে গেল। আমরা অবশ্য বেশি কিছু আশাও করিনি এখান থেকে।”
ভারতকে নিয়ে তার কী ভাবনা, এই প্রশ্নের মুখে পড়ে কিশোরী পরিবেশকর্মী সতর্কতার সুরে জানায়, ”জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে ভারতেও। বিজ্ঞান মেনে চলা উচিত।” দাভোসের সম্মেলন থেকে বিশ্বের কর্পোরেট আধিকারিকদের প্রতি গ্রেটা এই বার্তাই দিতে চেয়েছে যে জীবাশ্ম জ্বালানি (Fossil Fuels) নিষ্কাশনে তাঁরা যে বিনিয়োগ করছে, তা যেন অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং দূষণ রুখতে সেই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। আরও বেশি পরিমাণে বৃক্ষরোপন করে পরিবেশ রক্ষার যে সাধারণ বার্তা দেওয়া হয়, তা নিয়ে গ্রেটার বক্তব্য, ”বিশ্বজুড়ে আবহাওয়া পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে শুধুমাত্র বৃক্ষরোপনই যথাযথ নয়। এখনও আমরা বিপদের উপরেই দাঁড়িয়ে আছি।”
গ্রেটার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তিক্ত সম্পর্কের কথা সর্বজনবিদিত। জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে মার্কিন পুঁজিপতিদের প্রতিই গ্রেটার বার্তায় যথারীতি আরও চটেছেন ট্রাম্প। মার্কিন কোষাগার সচিব স্টিভেন মুকিন তাকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ”ওর উচিত কলেজে গিয়ে অর্থনীতি পড়া।” সম্মেলনের শেষদিনে এই কটাক্ষের জবাবও দিল সুইডিশ কিশোরী। বলল, ”উনি কে, আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। উনি নিজে কলেজে গিয়ে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তো। তাহলে আমাদের সামনে এসে সবটা বুঝিয়ে বলুন।” কিন্তু এত কম বয়সে গ্রেটার বার্তা কতটা কানে তুলবেন রাষ্ট্রনায়করা, তা সময়েই বলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.