সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুদূর আন্টার্কটিকার চেয়েও বেশি ঠান্ডা লাদাখ-দ্রাসে! অবাক করার মতো হলেও এটাই সত্যি। আন্টার্কটিকার তাপমাত্রা এই মুহূর্তে -২৬ ডিগ্রি। সেখানে লাদাখ-দ্রাসের কিছু অঞ্চলের তাপমাত্রা শনিবার -৩১ ডিগ্রি। তুষারের চাঁইয়ে পুরো ঢেকে গিয়েছে লাদাখ। স্থানীয় বাসিন্দা এবং শীতের ছুটি কাটাতে লাদাখ বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের কী অবস্থা তা এখনও জানা যায়নি।
লাদাখের লেহ শহরে তাপমাত্রা নেমে এসেছে -১৮ ডিগ্রিতে। কাশ্মীরের পহেলগামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা -১২.৭ ডিগ্রি। হিমাচল প্রদেশের কুরফি, মানালি, কল্পার মতো এলাকাগুলির তাপমাত্রাও হিমাঙ্কের নিচে। এদিকে প্রচণ্ড ঠান্ডায় জমে গিয়েছে দিল্লিও। শুক্রবারই দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৪.২-তে। শনিবার আরও ২ ডিগ্রি কমে রেকর্ড পারদ পতন হল। এদিন রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১২০ বছরের ইতিহাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এমন শীতলতম হল রাজধানী। আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯০১ সালের পর থেকে এমন কনকনে ডিসেম্বর দেখেনি দিল্লিবাসী। ঘন কুয়াশার কারণে কমেছে দৃশ্যমানতা। যার জেরে রেল, সড়ক ও বিমান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গত ১৪ ডিসেম্বর থেকেই শৈত্যপ্রবাহ চলছে দিল্লিতে। প্রবল ঠান্ডায় কাঁপছে গোটা উত্তর ভারত-সহ পশ্চিমবঙ্গও। গত দশ বছরের মধ্যে শীতলতম শ্রীনগরে তাপমাত্রা এদিন নেমে এসেছে -৫.৬ ডিগ্রিতে। বরফ জমে স্তব্ধ ডাল লেক।
এদিকে শুক্রবার শিলাবৃষ্টি আর হালকা তুষারপাতে উত্তরবঙ্গের পাহাড়-সমতলে দ্রুত নামছে পারদ। আবহবিদরা জানিয়েছেন, বছরের শুরুতেই বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। যার জেরে পারদ উর্ধ্বগামী হতে পারে। শুক্রবার সকালের পর সমতলে শিলিগুড়ি ও পাহাড়ের কিছু অংশে শিলাবৃষ্টির দাপট এতটাই ছিল যে তুষারপাতের মতো বরফের সাদা চাদরে ঢেকে গিয়েছিল গোটা এলাকা। এক ধাক্কায় তাপমাত্রার পারদ নেমে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করতে শুরু করে। শিলিগুড়িতে শনিবার সকাল থেকে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। গত কয়েকদিন ধরেই দার্জিলিং ও সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকায় শীতের কামড় বেড়ে গিয়েছে। সঙ্গে রয়েছে হিমেল হাওয়া। এদিন সকাল থেকে দার্জিলিং ও গ্যাংটকের তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের কাছাকাছি। হিমেল হাওয়া ও রোদ ঝলমলে পরিবেশে পর্যটকরা জমিয়ে শীত উপভোগ করছেন পাহাড়ে। যদিও পাহাড়ে শিলাবৃষ্টির পুরু আস্তরণে ঢাকা পড়েছে রেললাইন।
সড়কের বরফ কুচি সরাতে তিনধারিয়া এলাকায় নামানো হয় ড্রোজার। লাইনের বরফ সরিয়ে টয়ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রেখেছেন রেল কর্মীরা। অন্যদিকে কালিম্পংয়ের লাভা ও সংলগ্ন এলাকায় শনিবার সকাল থেকে ফের শুরু হয়েছে হালকা তুষারপাত। বরফের সাদা চাদরে মুড়েছে সিকিমের লাচেন, লাচুং, চুংথান, ইয়মথাং এলাকা। লাচুং থেকে ইয়ামথাং ও লাচেন থেকে গুরদংমার লেকের পথ অবরুদ্ধ। আবহাওয়া দপ্তরের দাবি, তাপমাত্রার পারদ আরও নামবে পাহাড়ে। দার্জিলিং ও সিকিমে তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া গবেষক মধুসূদন কর্মকার বলেন, “সমতলের পাশাপাশি পাহাড়ে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। সেখানে তাপমাত্রা নামতেই তুষারপাতের সম্ভাবনা বাড়বে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.