নিজস্ব সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: অবলুপ্তপ্রায় চারাগাছ তৈরি করতে বিষ্ণুপুর পাঞ্চেৎ বনদপ্তর জাপান সরকারের সহায়তায় গড়ে তুলছে এক অত্যাধুনিক নার্সারি। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে, শাল, মহুয়া, বহেড়া, হরিতকি, আমলকি, তেঁতুল অশ্বথ, চন্দন, লাল চন্দন, শিশু, জাম প্রভৃতি প্রজাতির চারা তৈরি হয়েছে। আরও চারা তৈরির কাজ চলছে।
প্রায় সাড়ে আট বিঘা জমির উপর এই নার্সারি গড়ে উঠেছে। সেখানে লক্ষ লক্ষ চারা তৈরি হয়েছে। এগুলো মাটিতে বসানোর অপেক্ষায়। শাল গাছের নতুন বনভূমি তৈরির লক্ষ্যেই এত বিপুল পরিমাণ শালের চারা, বলে জয়পুর রেঞ্জার জানালেন। পাঞ্চেৎ বিভাগের বনভূমিতে যেখানে আকাশমণি, শিশু, ইউক্যালিপটাস ছিল সেখানে এই শাল চারা বসানোর লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক বনভূমি বৃদ্ধির জন্য মহুয়া, জাম, তেঁতুল এই সব বৃক্ষের চারা বনমহোৎসবের মাধ্যমে মানুষকে বিনামূল্যে দেওয়ার কর্মসূচিও চালু করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সবুজশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুর জন্মে তাকে একটি মেহগনি চারা এবং শংসাপত্র দিয়ে সেই গাছ পরিচর্যার বার্তা দেওয়া হচ্ছে যাতে সমাজে সবুজ বৃদ্ধি পায়। এইসব নার্সারির মাধ্যমে লুপ্তপ্রায় এবং বিরল প্রজাতির বৃক্ষ-সহ আবার স্বমহিমায় পৃথিবীতে বিরাজ করবে এমনটাই মনে করছে জয়পুর পাঞ্চেৎ বিভাগের বনদপ্তর।
জয়পুর ফরেস্টের রেঞ্জ অফিসার সহদেব মুড়া বলেন, ‘‘জয়পুর ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের কাছে জায়গা প্রকল্পের মাধ্যমে এই কাজ করা হচ্ছে। সাড়ে আট বিঘা জায়গার মধ্যে এই নার্সারি করা হয়েছে। জায়গা প্রকল্প ২০১৪ সালে শুরু করা হয়েছিল। মাঝে কয়েক বছর বন্ধ ছিল। আবার ২০২৪ সাল থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে। এখন ৩৫ রকমের চারা তৈরি গাছ করা হচ্ছে। আগামিদিনে ৫০টিরও বেশি বিলুপ্তপ্রায় চারাগাছ তৈরি করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভুটরু, কেন্দ, লোকাল বেচি যে সমস্ত গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। হাতির খাবার জঙ্গল জিলাপি, ফাইকাস প্রজাতির গাছ, পিয়া শাল ইত্যাদি গাছগুলিও অবলুপ্রায়। এই গাছগুলি তৈরিতেও জোর দেওয়া হয়েছে। তাই ৩৫ থেকে ৪০ হাজার চারাগাছ তৈরি করা হয়েছে। সামনের বছর আরও বেশি টার্গেট নেওয়া হচ্ছে চারাগাছ তৈরির। ১২ থেকে ১৫ জন এফসিটি কর্মীরা চারাগাছ তৈরির কাজ করছেন।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.