সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কীভাবে মহাশূন্যে ঘুরতে থাকা পৃথিবী নামের এই গ্রহে কীভাবে হল প্রাণের সঞ্চার? কীভাবে আলোকিত হলাম আমরা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এবার মহাকাশে পাড়ি দিল উচ্চপ্রযুক্তি সম্পন্ন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (James Webb Space Telescope)। আর এই যাত্রার মধ্যে দিয়েই মহাকাশ গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা হল। হাবল টেলিস্কোপ আগেই বিদায় নিয়েছিল। এবার কাজ শুরু করল তারই উত্তরসূরি জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। বড়দিনের শুভক্ষণে আমেরিকার ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে এর সফল উৎক্ষেপণ করল নাসা। টুইটে সেই ভিডিও প্রকাশ করেছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা।
বিশ্ব মহাকাশ গবেষণায় এই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের গুরুত্ব ঠিক কতটা, কয়েকটি তথ্য না জানলে ঠিক উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। ১০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে তৈরি এই টেলিস্কোপটি তৈরি হয়েছে। মহাকাশের এই খুব শক্তিশালী টেলিস্কোপটি বানাতে নাসার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি। পৃথিবী থেকে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করবে এই টেলিস্কোপ। স্থানীয় সময় শনিবার সকালে আরিয়ান-৫ (Ariane-5) রকেটের সাহায্যে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে জেমস ওয়েব।
উৎক্ষেপণ সফল হওয়ার পর গন্তব্যে পৌঁছতে টেলিস্কোপটির সময় লাগবে মাসখানেক। পৃথিবীর যেদিকটায় সূর্যের বিপরীত দিকে অর্থাৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকে, সেই জায়গা থেকে কাজ শুরু করবে নাসার অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ। পুরোপুরি কর্মক্ষম হয়ে উঠতে লাগবে ৬ মাস। তারপরই ধীরে ধীরে মহাকাশের নানা অদেখা ছবি লেন্সবন্দি ধরতে শুরু করবে জেমস ওয়েব। এর আগে অবশ্য একবার অত্যাধুনিক এই টেলিস্কোপ মহাকাশে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল নাসা। কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে তা পিছিয়ে যায়। বড়দিনে শেষমেশ সাফল্য এল।
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে যে নয়া যুগের সূচনা হল, তা নিয়ে পুনের ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের বর্ষীয়ান অধ্যাপক তরুণ সৌরদীপের বক্তব্য, ”JWST বা জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ বিজ্ঞানের জগতে এক যুগান্তকারী উদ্ভাবনী। জ্যোতির্বিজ্ঞানে এই যন্ত্রের কাজ আলোড়ন ফেলতে পারে। ভারত এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে বলে আশাবাদী আমরা। শুধু মহাকাশ গবেষণাতেই নয়, JWST বিজ্ঞানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শাখার কাজেও তথ্য সরবরাহ করবে।” ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডনের অধ্যাপক আয়ুশ সাক্সেনার আবার আশা, মহাবিশ্বে কোনও বাসযোগ্য গ্রহের সন্ধান দিতে পারে জেমস ওয়েব। আপাতত আগামী ১০ বছর মহাকাশে সন্ধানী দৃষ্টি নিয়ে ঘোরাফেরা করবে নাসার অত্যাধুনিক টেলিস্কোপটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.