অর্ক দে, বর্ধমান: চন্দ্রযানের পর মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসের আরেক মাইলফলক স্থাপন করেছে ইসরো। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি সৌরযান ‘আদিত্য এল১’ সূর্যের সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে শ্রীহরিকোটা থেকে। আর সূর্যের (The Sun) কক্ষপথে মহাকাশ যান পাঠানোর এই কাজে বড় দায়িত্বে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) মেমারির ছেলে কৌশিক মণ্ডল। শনিবারের সেই মাহেন্দ্রক্ষণে তাঁর পরিবার কেরলে বসে ল্যাপটপের পর্দায় চোখ রেখেছিলেন। ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো মহাকাশ যানটি ঠিকমতো কক্ষপথে প্রবেশ করছে কিনা, সেই গুরুদায়িত্ব রয়েছে কৌশিকের উপর। শনিবার দুপুরে প্রাথমিকভাবে ‘আদিত্য এল১’-এর উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে।
পূর্ব বর্ধমানের মেমারির (Memari)মেলনা গ্রামের বাসিন্দা কৌশিক। বাবা সাধনচন্দ্র মণ্ডল। গ্রামে মুদিখানার দোকান তাঁর। দুই ছেলের মধ্যে কৌশিক বড়। ২০০৮ সালে স্থানীয় বনগ্রাম পরমানন্দ মিশন থেকে মাধ্যমিক পাশ করে কাটোয়ার জাজিগ্রামে পলিটেকনিক কলেজে ভরতি হন কৌশিক। পরে বর্ধমানের ইউআইটি থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন নিয়ে বি.টেক করেন তিনি। ২০১৪ সালে শিবপুরের আইআইইএসটি-তে (IIEST) এম টেক করেন। সে বছরই ইসরোয় (ISRO) যোগ দেওয়ার জন্য পরীক্ষা দেন। ২০১৬ থেকে ইসরোর বিজ্ঞানী হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেন।
কৌশিক আরামবাগের (Arambag)একটি কলেজের শিক্ষক। তাঁর কথায়, “খুব একটা সচ্ছল পরিবার নয়। নানান প্রতিকূলতার মধ্যেই বড় হয়েছি। লোকের কাছে চেয়েচিন্তে পড়াশোনা করেছি। বইয়ের অভাব মিটিয়েছে স্থানীয় গ্রন্থাগার ও বন্ধুরা।” ছেলের এত বড় সাফল্যের সাক্ষী থাকতে তিরুঅনন্তপুরমে (Thiruanantpuram) গিয়েছেন বাবা সাধন মণ্ডল ও মা সরস্বতী মণ্ডল। শনিবার দুপুরে কৌশিকের স্ত্রী প্রিয়া ল্যাপটপে ‘আদিত্য এল১’ সৌরযানের উৎক্ষেপণের সম্প্রচার চালিয়ে দেন। সেখানেই চোখ পেতে ছেলের সঙ্গে সারা দেশের সাফল্যের সাক্ষী থাকেন তিনি। সাধনবাবু জানান, “অনেক কষ্ট করে ছেলেদের বড় করেছি। শনিবার উৎক্ষেপণ সফল হতে দেখে গর্ব হল। এই সাফল্য তো শুধু ছেলের নয়, গোটা দেশের, বিজ্ঞানের।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.