সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাকাশ গবেষণায় যে কোনও সাফল্যে সবার আগে উঠে আসে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার (NASA), কিংবা ইউরোপীয় কোনও সংস্থার। কিন্তু এ বিষয়ে যে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাও পিছিয়ে নেই, এবার তার প্রমাণ মিলল। বিশ্বের মহাকাশ বিজ্ঞানীরাই ভারতের (India) কীর্তিকে ধন্য ধন্য করলেন। কী সেই কৃতিত্ব? নিজেদের তৈরি টেলিস্কোপে মহাকাশে ব্ল্যাক হোল (Black Hole) বা কৃষ্ণগহ্বরের জন্ম চাক্ষুষ করলেন ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। তাঁদের তৈরি ক্যাডমিয়াম-জিঙ্ক টেলুরাইড ইমেজারের (CZTI) মাধ্যমে ধরা পড়েছে জন্মবৃত্তান্ত। ইন্টার ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের মতে, ভারতের এই কৃতিত্ব ব্ল্যাক হোল সংক্রান্ত গবেষণাকে আরও খানিকটা এগিয়ে দিল।
বিশালদেহী নক্ষত্রদের সংঘর্ষে মহাকাশে তৈরি হয় কৃষ্ণগহ্বর। বিরাট হাঁ-মুখ অন্ধকার গর্ত, যার অসীম আকর্ষণ এড়াতে পারে না আলো। আলোক তরঙ্গ এর মধ্যে দিয়ে যেতে গেলেই তা গিলে খায়। মৃত নক্ষত্র থেকেও এই ব্ল্যাক হোল তৈরি হতে পারে। সাড়ে ৬ বছর আগে এই যন্ত্রটি প্রথম কাজ শুরু করেছিল। অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ”এটা একটা যুগান্তকারী সাফল্য। CZTI-এর গামা রশ্মি থেকে প্রাপ্ত সমস্ত ডেটা বিশ্লেষণ করে যা মিলেছে, তা গবেষণা ক্ষেত্রে একটা বড় প্রভাব ফেলবে।” গামা রে বার্স্ট প্রকল্পটির নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক বরুণ ভালেরাও।
২০১৫ সালে গামা রে বার্স্ট (Gama Ray Burst) প্রকল্পের কাজ শুরু করেন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। টানা সাড়ে ৬ বছর ধরে CZTI যন্ত্রটি মহাকাশের দিকে চোখ রেখে বসেছিল। লক্ষ্য একটাই, ব্ল্যাক হোলের জন্ম চাক্ষুষ করা। যখন তারাদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে ওই ম্যাজিক তৈরি হয়, তখন তা ধরা পড়ে ওই যন্ত্রে। শুধু তাইই নয়, এই যন্ত্রটি অতিবেগুনি রশ্মি, এক্স রশ্মি থেকে বিকিরণের তথ্যও দিতে সক্ষম। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত পিএইচডি-র ছাত্র গৌরব বলছেন, এই কাজ খুবই উদ্দীপনার। যতবার এই তথ্য নিয়ে কাজ করি, ততবারই মনে হয়, সেই কোন আলোকবর্ষ দূর থেকে একটা তরঙ্গ আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে।”
দিন কয়েক আগেই ব্ল্যাক হোলের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছিল ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ স্যাজিটেরিয়াস এ। ২০১৯ সালেও ব্ল্যাক হোলের ছবি ধরা পড়েছিল এই টেলিস্কোপে। এবার তার জন্ম চাক্ষুষ করল ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যন্ত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.