Advertisement
Advertisement

বিষাক্ত কেউটে দেবীজ্ঞানে পুজো! ‘ঝাঁকলাই’ নিয়ে গবেষণায় ভাতারে বিশ্বখ্যাত সর্পবিশেষজ্ঞ

ভাতার ও মঙ্গলকোটের চারটি গ্রাম ঘুরে গেলেন সর্পবিশেষজ্ঞ রমুলাস উইটেকর।

Indian herpetologist Romulus Whitaker visits Bhatar village
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:September 1, 2019 4:37 pm
  • Updated:September 1, 2019 4:37 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: জ্যান্ত কেউটে ধরে দেবীজ্ঞানে পুজো করেন গ্রামবাসীরা। আর এই বিষধর কেউটের সঙ্গেই ঘর করেন পূর্ব বর্ধমানের চারটি গ্রামের মানুষ। স্থানীয় এলাকায় যে সাপ ’ঝাঁকলাই’ নামে পরিচিত। পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার বড়পোশলা এবং মঙ্গলকোট থানার ছোটপোশলা, মুশারু এবং পলসোনা মূলত এই চার গ্রামেই দেখা মেলে ঝাঁকলাই নামে কেউটে প্রজাতির সাপের। এবার ঝাঁকলাই নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন বিশ্বখ্যাত সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ রমুলাস উইটেকর।

৭৩ বছর বয়সী এই গবেষক চারদিন ধরে কাটিয়ে গেলেন এলাকায়। তিনি জানিয়েছেন, তীব্র বিষধর কেউটের সঙ্গে কিভাবে কয়েকটা গ্রামের মানুষ দিবানিশি ওঠাবসা করেন, অথচ তারা বিশ্বাসের সঙ্গে নিরাপদেই বেঁচে থাকেন মূলত এই বিষয়টি নিয়েই তিনি গবেষণা শুরু করেছেন। বস্তুত ঝাঁকলাই নিয়ে ঘর করা ওই চার গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে আপ্লুত একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সন্মা্নে ভূষিত গবেষক রমুলাস উইটেকর।

Advertisement

প্রতিবছর আষাঢ় মাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথিতে ভাতারের বড়পোশলা, শিকোত্তর, মুকুন্দপুর এবং মঙ্গলকোটের ছোটপোশলা, পলসোনা, মুশারু এবং নিগন মিলে সাতটি গ্রামে ঝাঁকলাই পুজো হয়। তবে বর্তমানে বড়পোশলা, ছোটপোশলা, মুশারু এবং পলসোনা এই চার গ্রামেই শুধু দেখা যায় ঝাঁকলাই নামে এই সাপের। গ্রামবাসীরা জ্যান্ত সাপকে দেবীজ্ঞানে পুজো করেন। বিশ্বাস, ঝাঁকলাই কাউকে কামড়ায় না। আর কোনও কারনে ছোবল দিলে দেবীর মন্দিরের মাটি লেপে দিলেই বিষমুক্ত হয়ে যায় রোগী। এই বিশ্বাস নিয়েই ঝাকলাই নিয়ে ঘর করেন চার গ্রামের বাসিন্দারা। রান্নাঘর থেকে শোবার ঘর সর্বত্র অবাধ বিচরণ এই বিষধর কেউটে প্রজাতির সাপের।

রমুলাস উইটেকর মাদ্রাজ স্নেক পার্ক ও মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। নিউইয়র্কে জন্ম হলেও তিনি ভারতের নাগরিক। সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ হিসাবে বিশ্বজোড়া তার নাম। গত বুধবার তিনি ভাতারে আসেন। তার সহযোগী হিসাবে ছিলেন সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ হুগলি জেলার বাসিন্দা বিশাল সাঁতরা। এছাড়া ভাতারের বাসিন্দা সর্পবিশেষজ্ঞ ধীমান ভট্টাচার্যও রমুলাস উইটেকরকে সাহায্য করেন। বিশাল সাঁতরা বলেন, ”স্যর প্রায় ৪০ বছর আগেই ঝাঁকলাই সাপ নিয়ে গ্রামবাসীদের জীবনযাপনের কথা শুনেছিলেন। এলাকায় আসার ইচ্ছা আগে থেকেই ছিল। গ্রামের আবালবৃদ্ধবণিতা কিভাবে বিষধর সাপকে ভক্তিভরে আপন করে নেন সেটাই ছিল আমাদের গবেষণার বিষয়।”

নবীন গবেষক বিশালের কথায়, ”আর পাঁচটা কেউটের সঙ্গে ঝাঁকলাইয়ের কোনও তফাত নেই। তবে ওই চার গ্রামের এই সাপগুলির চালচলন অনেক স্বতন্ত্র।” ভাতারের বাসিন্দা ধীমান ভট্টাচার্য বেশ কয়েকবছর ধরেই ঝাঁকলাই সাপ নিয়ে পর্যবেক্ষন চালিয়ে যাচ্ছেন। ধীমানবাবু বলেন, ”রমুলাস উইটেকরের মতন একজন সর্পবিশারদ ঝাঁকলাই নিয়ে গবেষণা করতে এসেছেন এটা আমাদের গর্ব। আমাদের আশা তার কাছে আমরা নতুন কিছু জানতে পারব।” রমুলাস উইটেকর রবিবার ফিরে যান। তিনি বলেন, ”ভবিষতে ঝাঁকলাই নিয়ে গবেষণার কাজে এলাকায় ফের আসব।”

ছবি: জয়ন্ত দাস

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement