ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার কবল থেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার বাঘিনি নাদিয়া। তবে এই ভাইরাস বাঘ কিংবা অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের জন্য ডেকে এনেছে অন্য বিপদ। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ঘরবন্দি অনেকেই। ফলে বিভিন্ন বনাঞ্চলে পাহারাও কিছুটা ঢিলে এই মুহূর্তে। ফলে চোরাপাচারকারীদের দাপট বেড়েছে। আর সেটাই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বন্যপ্রাণ সংরক্ষকদের কাছে। তাঁদের কথায়, করোনা ভাইরাস ততটা বিপদের নয়, যতটা বিপদের চোরাপাচারের রমরমা।
বন্যপ্রাণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা কে উল্লাস করন্থের মতে, সাধারণ বাঘের জন্মহার এবং মৃত্যুর হার দুটোই বেশি। এর আগে আরও নানা রোগের সংক্রমণ ঘটেছে বনে-জঙ্গলে। কিন্তু বাঘেদের সংখ্যার উপর তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তেই দেখা গিয়েছে, সেই হার কিছুটা কম। এতেই তাঁর আশঙ্কা, চোরাচালান বাড়ছে। বিশেষত দক্ষিণ ভারতে পশ্চিমঘাট পর্বতে বাঘেদের জন্য সংরক্ষিত এলাকায় এই উপদ্রব বেশি। সম্প্রতি এ রাজ্যের পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার জঙ্গলে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের খবর সামনে এসেছে। সেখানেও চোরাশিকারিদের হাত থাকতে পারে বলে প্রাথমিক অনুমান। তাদের দৃষ্টি অবশ্য জঙ্গলের মূল্যবান গাছের কাঠের দিকে।
যদিও এর কারণ এক নয়, একাধিক বলে মত বিশেষজ্ঞদের। লকডাউনের জেরে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র থেকে কর্মী সংখ্যা কমেছে। জঙ্গলগুলিতে টহল কিছুটা আলগা হয়েছে। আর তার ফাঁক গলে কার্যত পাচারকারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে ঘন জঙ্গল এলাকা। এছাড়া লকডাউনের জেরে কাজ হারানোয় দিনমজুর বা শ্রমিকের দল আয়ের রাস্তা হিসেবে এ ধরনের অন্ধকার জগতে প্রবেশ করছে। কেউ আবার স্রেফ খাবার জোটানোর স্বার্থে জঙ্গলে ঢুকে ছোটখাটো প্রাণী শিকার করছে। কোড়াগু এবং শিভামোগা অঞ্চলে বনজগতে চোরাচালানে একটা নতুন স্রোত এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ কে উল্লাস করন্থ। তাঁর মতে, করোনা ভাইরাসের প্রভাব নিয়ে সংবাদমাধ্যমে এত দিক উঠে আসছে, কিন্তু এই দিকটা একেবারেই উপেক্ষিত। অথচ মহামারির পরোক্ষ প্রভাব কীভাবে বন্যপ্রাণের উপর পড়ছে, তাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই তাঁর মতে, COVID-19 নয়, এই সংকটের সময়ে বন্যপ্রাণীদের মূল শত্রু হয়ে দাঁড়াচ্ছে চোরাশিকারিদের তাণ্ডব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.