অরূপ বসাক, মালবাজার: নদীর জলে ভেসে উঠছে শ’য়ে শ’য়ে নদীয়ালি মরা মাছ। সাতসকালে উত্তরবঙ্গের মূর্তি নদীর ধারে এত মাছ পড়ে থাকতে দেখে তা কুড়োতে ভিড় জমালেন আশেপাশের মানুষজন। মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকদের প্রাথমিক অনুমান, নদীর জলে বিষক্রিয়ার জেরেই মাছের মড়ক লেগেছে। তাই সেইসব মাছ সংগ্রহ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বাসিন্দাদের।
জলপাইগুড়ির মেটেলি ব্লকের গরুমারা অভয়ারণ্য লাগোয়া মূর্তি নদী। তার পাড়েই ভেসে উঠেছে মাছেদের মৃতদেহ। তা স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে পড়ামাত্রই খবর পৌঁছে যায় জেলা পরিষদের মৎস্য বিভাগে। খবর পেয়ে ওই এলাকায় পৌঁছান জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ সীমা সরকার এবং গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বাপন রায়। তাঁরা প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি দেখভাল করেন। তারপর সেখানে যান মেটেলি ব্লকের মৎস্য
আধিকারিক জয়দীপ মহীনতামনি। তিনি নদীর জল পরীক্ষা করেন। যান ভূগোল মূর্তি সোশ্যাল ওয়ার্ক ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সাহের আলি। মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ সীমা সরকার বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে ভোরে মূর্তি নদীতে আসি। সত্যি বহু নদীয়ালি মাছের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে বিষক্রিয়ার ফলেই এই ঘটনা।’
এর আগে জেলা পরিষদ থেকে মূর্তি নদীতে বহু নদীয়ালি মাছ ছাড়া হয়েছিল। মরা মাছ ভেসে ওঠার বিষয়টি মৎস্য দপ্তরকে জানানো হয়েছে। সংলগ্ন এলাকার জনগণকে নিয়ে সচেতনতা শিবির করা হবে। স্বেচ্ছাসেবী সাহের আলি বলেন, ‘এই ভাবে নদীতে বিষ দেওয়া হলে সমস্ত নদীয়ালি মাছ একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। মূর্তি নদীর জল গরুমারার বন্যপ্রাণীরাও পান করে। বিষের প্রভাবে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। মেটেলি ব্লক মৎস আধিকারিক জয়দীপ মহীনতামনি বলেন, ‘নদীর জল পরীক্ষা করে দেখা গেল, তীব্র কোনও বিষ দেওয়া হয়নি। মরা মাছের নমুনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।তবে কী ধরনের বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
কিছুদিন আগে ময়নাগুড়ির রামসাই এলাকায় একটি নদীতে বিষক্রিয়ায় বহু মাছের মৃত্যু হয়েছে। এবার মূর্তি নদীতেও একই ঘটনা। একের পর এক বিষ প্রয়োগের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু করেছে। ঘটনার পর থেকেই মূর্তি নদীর ওই এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু করেছেন বনকর্মীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.