টিটুন মল্লিক,বাঁকুড়া: নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল আগেই। বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড় সংলগ্ন পিকনিকের জায়গাগুলতে থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিকের গ্লাস ব্যবহার বন্ধ করার আবেদন করে পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিং পড়েছিল। অথচ তারপরও সেখানে পিকনিক করতে যাওয়া মানুষজন এবং ব্যবসায়ীদের একাংশ সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই ব্যবহার করলেন প্লাস্টিক।আর প্লাস্টিকমুক্ত অভিযানে গিয়ে শুক্রবার চল্লিশজন পর্যটককে হাতেনাতে ধরলেন ছাতনার বিডিও শাশ্বতী দাস। জরিমানা করা হল চারজন ব্যাবসায়ীকে।
বিডিও বলেন, ”এদিন ওই এলাকায় ৪ জনের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এবং আমাদের তরফে ওই কমিটির সদস্যদের পরিচয়পত্রও দেওয়া হয়েছে। যারা মূলত এই পর্যটন কেন্দ্রে প্লাস্টিকমুক্ত করতে নজরদারি চালাবেন এবং আগত পর্যটকদের বিভিন্ন রকমের সহযোগিতা করবেন।” গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁকুড়ার এই পর্যটন কেন্দ্রে শুরু হয়েছে ঠাসা ভিড়। প্রায় প্রতিদিনই চড়ুইভাতি করতে হাজার হাজার মানুষ আনাগোনা করছেন এই পর্যটন কেন্দ্র। এদিনও বাঁকুড়া শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় ছাতনা। এবার ছাতনা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পেরলেই বাঁকুড়ার একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র শুশুনিয়া। পাহাড়প্রেমীদের কাছে এই শুশুনিয়া পাহাড় অত্যন্ত জনপ্রিয়। স্থানীয়দের কথায়, রক ক্লাইম্বিংয়ের জন্য সারা বছরই মানুষজন এখানে এসে থাকেন। প্রায় দেড় হাজার ফুট উঁচু এই পাহাড় চড়বার অভিজ্ঞতা আপনাকে দেবে এক অনন্য অনুভূতি।
রোমাঞ্চকর এই রক ক্লাইম্বিং শেষ করে চূড়ায় উঠেই চোখের সামনে চারপাশের সবুজ গ্রামের লাল মেঠো পথের মনোরম দৃশ্য সকল ক্লান্তি মিলিয়ে যাবে নিমেশে। অভিযোগ, বেশ কিছু পর্যটকের প্লাস্টিক ব্যবহারের জন্য সৌন্দর্য হারাচ্ছে শুশুনিয়া। অভিযোগ, পর্যটকদের একাংশ পাহাড়ের উপরে উঠে প্লাস্টিকের বোতল, থার্মোকলের থালা, মদের বোতল, চায়ের কাপ ফেলে নেমে আসছেন। এতেই পাহাড়ের গায়ে আবর্জনার স্তুপে পরিণত হচ্ছে। ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি বঙ্কিম মিশ্রের কথায়, ”যা কখনই কাম্য নয়।”
এদিন ছাতনার ব্লক সমস্টি উন্নয়ন আধিকারিক শাশ্বতী দাস স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত, পুলিশ এবং বনদপ্তরের লোকজনদের নিয়ে অভিযান চালান শুশুনিয়া পাহাড় সমলগ্ন এলাকায়। শুধু অভিযান চালানো এবং সচেতনতার পাঠ দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি তিনি। নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্লাস্টিক ব্যবহারকারী পর্যটকদের জরিমানা করে বেশ কিছু প্লাস্টিকের সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেছেন ছাতনার বিডিও শাশ্বতী দাস। তাঁর হুঁশিয়ারি, প্রয়োজনে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.