ছবি: প্রতীকী
নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি: ওই দেখা যাচ্ছে হলুদ, সবুজ মেশানো উজ্জ্বল আলোর গোলা। আলো তো বোঝা গেল, কিন্তু কীসের আলো? কেউই তা বুঝতে পারছেন না। আবার অনেকে অশরীরী ভেবে মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছেন না। এমনই অভাবনীয় কাণ্ড ঘটল রিষড়ায়। সোমবার রাতে রিষড়ার (Rishra) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের পদ্মপুকুরে গোলাকার আলোর ছটা দেখে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। লোকমুখে ঘটনার কথা চাউর হতেই বিরল ওই দৃশ্য দেখতে এলাকায় রীতিমতো ভিড় জমে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রিষড়া থানার পুলিশ। ভিড় সামলাতে কার্যত হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।
কেউ কেউ তখন একে সাক্ষাৎ ঈশ্বরের মহিমা ভেবে মনে মনে ইষ্টনাম জপতে শুরু করে দিয়েছেন। কেউ আবার বলেই বসেন, জন্মের পর থেকে তাঁরা পুকুরটি দেখে আসছেন। এই পুকুরে বিভিন্ন সময়ে বহু দেব-দেবীর বিসর্জন হয়েছে। সেই সব দেবদেবীর কৃপাতেই পুকুরে ফুটে উঠেছে দিব্যজ্যোতি।
কিন্তু, আদতে তা নয়। পরে জানা যায়, সেটি আসলে আলেয়া (Will o d wisp)। সাধারণত গ্রামেগঞ্জের পুকুর বা ডোবার উপর সন্ধ্যার দিকে আলেয়া দেখতে পাওয়া যায়। পুকুর বা ডোবার আশপাশে পচে যাওয়া আগাছা, গাছের পাতা, জলের নিচে থাকা পাঁক পচে যে গ্যাস নিঃসৃত হয়, তা কোনওভাবে বায়ুর সংস্পর্শে এলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে উজ্জ্বল আলোকছটার সৃষ্টি করে। সোমবার রাতে সেই ঘটনারই সাক্ষী হয়েছিলেন এলাকাবাসী।
একই কথা শোনা গিয়েছে বিজ্ঞান মঞ্চের শাখা রিষড়া ইনস্টিটিউটের রথীন শীলের গলায়। তিনি জানান, “এর সঙ্গে কোনও অলৌকিক বিষয় জড়িত নয়। পুকুরে রাসায়নিক বিক্রিয়ার জেরে এই গোলাকার হলুদ আলো দেখা গিয়েছে। গ্রামবাংলায় এই ধরনের আলো মাঝেমধ্যেই দেখা যায়। চলতি কথায় একে আলেয়া বলে। পুকুরের মধ্যে দীর্ঘদিনের জমে থাকা পাঁক আর পচে যাওয়া গাছের পাতা থেকে নির্গত গ্যাস বায়ুর সংস্পর্শে এলে এই ধরনের ঘটনা ঘটে।” একবিংশ শতাব্দীতেও ব্যাখ্যাহীনভাবে আগেভাগেই ঘটনাটিকে অলৌকিক, দৈবশক্তির প্রকাশ আখ্যা দিয়ে দেওয়ায় সাধারণ মানুষের বিজ্ঞানমনস্কতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয়দের একাংশও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.