সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বড়সড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় কাঁটা বিজ্ঞানীরা। ভূমিকম্পের (Earthquake) ভয়ে থরহরিকম্প হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল। কম্পনের মাত্রা হতে পারে রিখটার স্কেলে ৭ বা তার বেশি। ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বিপুল। কিন্তু তা রুখে দেওয়াও সম্ভব একটু সতর্ক হলে। বিজ্ঞানীদের সতর্কবাণী, এখন থেকে প্রস্তুতি নিলে হিমালয় (Himalaya Region) পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষতি কমানো সম্ভব, এমনকী ৯৯.৯৯ শতাংশ ক্ষতি রোখা যাবে।
সম্প্রতি উত্তরাখণ্ড, নেপাল, জম্মু-কাশ্মীরের একাধিক এলাকা কেঁপে উঠেছে ঘনঘন। নেপালের (Nepal) পশ্চিমাংশে ভূমিকম্পে ৬ জনের মৃত্যুর খবরও মিলেছে। ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির ভূতত্ববিদ অজয় পাল তথ্য হাতে নিয়ে জানাচ্ছেন, গত ১৫০ বছর ধরেই হিমালয়ের পাদদেশে থাকা রাজ্যগুলিতে কম্পনে অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। কখনও উত্তরকাশী, শিলং, বিহার, কখনও নেপাল – নানা জায়গায় ভূমিকম্প হয়েছে এবং এই সবই কম্পনপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। তবে এবার বিপদ আরও বেশি। সাতের বেশি মাত্রা প্রবলভাবে দুলে যেতে পারে হিমালয় পর্বতমালার ভূগর্ভ। এতদিন পর্যন্ত এই এলাকায় কম্পনের সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল ৬.৬।
ভারতীয় (Indian) ও ইউরেশীয় (Eurasian) প্লেটের সংঘর্ষের ফলে ভূমি থেকে উৎপত্তি পর্বতমালার। সেই দুই প্লেট যখন পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কা খায়, তখনই শুরু হয় ভূমিকম্প। বেশি শক্তিশালী প্লেট অপরটির উপর উঠে গেলে বিপর্যয় বেশি হয়। এই মৌলিক ধারণা তো সকলেরই রয়েছে। এখন ভূতাত্ত্বিকদের ব্যাখ্যা, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভঙ্গিল পর্বতের গঠনগত কিছু পরিবর্তন হয়েছে। তার জেরে ভূগর্ভের ভিতর তোলপাড় হয়েছে বিস্তর। তাতে ভারতীয় প্লেটের উপর চাপ ক্রমশ বাড়িয়েছে ইউরেশীয় প্লেট। সেই চাপেই বারবার কেঁপে ওঠে হিমালয়ের পাদদেশ। তাতে আসলে প্লেটগুলি শক্তি ক্ষয় করে স্থিতাবস্থায় আসে। সিসমিক জোনে (Seismic Zone) এই অংশ চার ও পাঁচের মধ্যে রয়েছে, অর্থাৎ উচ্চ কম্পন প্রবণতা সম্পন্ন।
দুই প্লেটের রেষারেষিতে একটা সময় পর পাতালের শক্তি এতটাই বেড়ে যাবে যে বড়সড় কম্পন ছাড়া তা বেরনোর উপায় থাকবে না। বিজ্ঞানী অজয় পালের কথায়, ”আমরা জানি না তেমন প্রলয় কবে আসবে। আজ থেকে ১০ দিন পর নাকি ১০০ বছর পর। তবে এই এলাকা সবসময় অত্যন্ত উত্তেজনাপ্রবণ, অশান্ত। বারবার কম্পনেই একমাত্র স্থিতিশীল হওয়া সম্ভব।” কিন্তু ৭ মাত্রার কম্পনে যে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হবে, তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। এখন থেকে প্রস্তুতি নিলে সেই ক্ষতির হাত থেকে নিস্তার পাওয়াও সম্ভব। এর উপায় বাতলাতে গিয়ে বিজ্ঞানী পাল জাপানের উদাহরণ দেন। তাঁর মত, নিখুঁত পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জেরেই এত কম্পনপ্রবণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও জাপানের বিশাল কোনও ক্ষতি হয় না। জনসচেতনতা, পাহাড়ি এলাকায় নির্মাণকাজে যথাযথ পরিকল্পনা – এসবের দিকেই জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি সম্ভব সাত মাত্রার কম্পন হলে হিমালয়ের আছড়ে পড়া থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখা? উত্তর কালের গর্ভে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.