সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। সংক্ষেপে এআই। বাংলা করলে যা দাঁড়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কয়েক বছর আগেই ওয়াকিবহাল মানুষজন ছাড়া এই বিষয়ে তেমন হেলদোল ছিল না কারও। কিন্তু চ্যাটজিপিটি থেকে ডিপফেক এখন দৈনন্দিন চর্চায় জড়িয়ে গিয়েছে। অদূর ভবিষ্য়তে কি এমন দিন আসবে যেদিন এআই আমাদের মন পড়ে ফেলবে?
কেন এমন প্রশ্ন উঠছে? আসলে বছরের শুরুতেই ‘অসাধ্য সাধন’ করেছে ধনকুবের এলন মাস্কের (Elon Musk) সংস্থা Neuralink। মানব মস্তিষ্কে বসানো হয়েছে একটি ‘ব্রেন ইন্টারফেস’ অর্থাৎ চিপ। যা মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটারের সরাসরি যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারে। অর্থাৎ এর সাহায্যে স্রেফ মনে মনে ভাবলেই মাউসের কার্সার নড়েচড়ে বেড়াবে স্ক্রিনে! এরও আগে ২০২৩ সালের মে মাসে মার্কিন গবেষকরা ‘মাইন্ড রিডিং এআই হ্যাট’ উদ্ভাবন করে চমকে দিয়েছিলেন। জানা গিয়েছিল, এই টুপি পরে থাকলে তা মগজে জন্ম নেওয়া শব্দকে ‘ডিকোড’ করে ফেলতে পারে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নটা ওঠা খুবই স্বাভাবিক। মনে হতেই পারে, এমনও দিন আসতে পারে অচিরেই, যখন কম্পিউটার একজনের মনের ‘খবর’ দিব্যি ট্রান্সস্ক্রিপ্ট বানিয়ে হাজির করে দেবে অন্য কারও সামনে! অর্থাৎ ‘গোপন কথাটি রবে না গোপনে’?
আসলে আমরা যা ভাবি, তার একটা নির্দিষ্ট ‘প্যাটার্ন’ তৈরি হতে থাকে। আপনি রোমান সাম্রাজ্য নিয়ে ভাবুন কিংবা প্রেমিকার সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার স্মৃতিরোমন্থন করুন, সব কিছুরই প্যাটার্ন আছে। তাহলে এআই (AI) যদি আপনার কার্সারকে নড়ানোর সংকেত পড়ে ফেলতে পারে, এগুলোও পারবে। এমনটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
কিন্তু আসলে বিষয়টা তেমন নয়। কেননা কার্সারের নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করার সংকেত পড়ে ফেলা এক আর মনের ভাষা পড়া আর এক। প্রথমটা পড়া অপেক্ষাকৃত ভাবে অনেক সহজ। কেননা সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সংকেতটুকু পড়ে ফেললেই হবে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটা অত্যন্ত জটিল। কোনও নির্দিষ্ট মানসিক অবস্থা ও সেই সময়ে মস্তিষ্কের ভিতরে নির্দিষ্ট সংকেতের ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ ম্যাপিং করা দরকার। যা এআই করে না। বলা ভালো পারে না। ফলে মনে মনে কে কী ভাবছে, তা বোঝা সম্ভব নয় তার পক্ষে। কিন্তু ভবিষ্যতে? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তো দিনে দিনে উন্নতি করে চলেছে। তাহলে আগামিদিনে এমন কিছু হওয়া কি অসম্ভব নয়? একথা ভাবতে বসলে ভেবে দেখুন আমাদের মস্তিষ্কের কথা। যা বিজ্ঞানের এই প্রবল উন্নতির পরও রয়ে গিয়েছে এক ‘রহস্যময় প্রদেশ’ হয়ে। যার অধিকাংশই অজানা। নিউরো সায়েন্স আজও নিতান্তই বাল্যাবস্থায় রয়েছে। তাই এআই সব জেনে ফেলবে, এমন ভেবে খামোখা টেনশন বাড়িয়ে লাভ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.