ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: নাসা এর মধ্যেই বিক্রমের বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ইসরোর মুখে একেবারে কুলুপ। শেষ টুইটটা ছিল পাঁচদিন আগের- ‘বিক্রমের হদিশ মিলেছে’। সেই শেষ। আশা অনেকটাই ছিল শুক্র থেকে শনিবারের মধ্যে। কারণ ছিল পূর্ণিমা। ইসরোর সূত্র জানিয়েছিল, এই সময় চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্য একেবারে মাথায় উঠবে। তখনই বিক্রমের সক্রিয় হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। কিন্তু দিনের শেষে রইল হতাশাই। না ইসরো, না নাসা, এখনও কারও ডাকে সাড়া দেয়নি বিক্রম।
হিসাব অনুযায়ী দেখা গিয়েছিল, ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাতে সময় পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ, ৭ তারিখ চাঁদের মাটিতে ‘হার্ড ল্যান্ড’ করার পর থেকে গুনে ১৪ দিন। এই ক’দিনই সূর্যের আলো পাবে বিক্রম। নিজের সোলার সেলকে চার্জ করে কাজে লাগিয়ে নেবে সব ক’টা দিন। কিন্তু নিয়মমাফিক কিছুই হয়নি। নামতে গিয়ে হার্ড ল্যান্ডিং হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় মুখ থুবড়ে কাত হয়ে পড়েছে। যার জেরে তার রেডিও ট্রান্সমিশন অ্যান্টেনা জখম হয়ে গিয়েছে। জ্ঞান হারিয়ে সেই থেকেই দক্ষিণ মেরুতে পড়ে রয়েছে বিক্রম। তারপর থেকে অনবরত ইসরো আর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা বিক্রমকে বেতার তরঙ্গের সংকেত পাঠাচ্ছে। ইসরোর সদর দপ্তর বেঙ্গালুরু থেকে ৩২ মিটার ব্যাস ও নাসার ক্যালিফোর্নিয়া, অস্ট্রেলিয়া বা মাদ্রিদের ৭৫ মিটারের কাছাকাছি ব্যাসের একাধিক অ্যান্টেনা থেকে বিভিন্ন সময় সংকেত পাঠানো হচ্ছিল। এদিনও ইসরোর পাশাপাশি নাসার মাদ্রিদ ও ক্যানবেরার অ্যান্টেনা থেকে সংকেত পাঠানো হয়। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি।
এই ১৪ দিনের মধ্যে শনিবারই ছিল পূর্ণিমা। সেই অনুযায়ী চাঁদের মধ্য গগনে সূর্য। অর্থাৎ গনগনে গরম। তখনই তার ব্যাটারি সবচেয়ে বেশি চার্জ হওয়ার কথা। সবচেয়ে সক্রিয় থাকার কথা সোলার সেল। অর্থাৎ সংকেত পাঠালে প্রবল কঠিন অবস্থায় তখনই তার সাড়া দিতে সুবিধা হবে। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গিয়েও মিলল না সাড়া। এদিন নাসা প্রায় ঘণ্টাতিনেক টানা সংকেত পাঠিয়েছে। তার সাড়া পাওয়ারও আশায় রয়েছে। আগামী ১৭ তারিখ তাদের নিজস্ব অরবিটার এলআরও থেকে সংকেত পাঠানোর কথা রয়েছে। কিন্তু ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে সাড়া পাওয়ার আশা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.