প্রতীকী ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজ থেকে প্রায় ৭ হাজার বছর আগের সময়। আচমকাই আকাশ থেকে আছড়ে পড়ল এক অতিকায় গ্রহাণু! তৈরি হল প্রায় ১.৮ কিমি চওড়া এক অতিকায় গর্তের। যা আজ গুজরাটের (Gujarat) কচ্ছের লুনা স্ট্রাকচার নামে পরিচিত। এতদিন রহস্য ছিল ওই গর্তের জন্ম নিয়ে। এবার বিজ্ঞানীরা জানালেন, নিশ্চিত ভাবেই মহাকাশের কোনও ‘আগন্তুকে’র আছড়ে পড়ার কারণেই ওই বিরাট গহ্বরের সৃষ্টি।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, ওই গর্তের মধ্যে থাকা পাথর ও ধুলো খতিয়ে দেখে জানা যাচ্ছে, সম্ভবত লোহা অথবা লোহা এবং পাথরের মিশ্রণে তৈরি কোনও গ্রহাণুই (Asteroid) আছড়ে পড়েছিল এখানে। তাছাড়া ওই অঞ্চলে প্রাগৈতিহাসিক উদ্ভিদের দেহাবশেষও পাওয়া গিয়েছে। রেডিওকার্বন ডেটিংয়ের সাহায্যে বোঝা যাচ্ছে, ৬ হাজার ৯০৫ বছর আগে ওই গ্রহাণু পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিল। সেখানে যে ধাতুগুলি পাওয়া গিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম প্ল্যাটিনাম, অসমিয়াম, ইরিডিয়াম, প্যালাডিয়াম, রোডিয়াম। তবে ভূমি সংলগ্ন অঞ্চল এতটাই শক্ত ও পাথুরে, যে ঠিক কী ধরনের গ্রহাণু আঘাত হেনেছিল তা পরিষ্কার ভাবে বোঝা সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, যে গবেষক দল এই নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে সেখানে রয়েছেন কেরল বিশ্ববিদ্যালয়, জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, কচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্থ সায়েন্স স্টাডিজ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স ডাইরেক্ট’ জার্নালে। এতকাল ধারণা ছিল ওই গহ্বরের সঙ্গে যোগ রয়েছে সিন্ধু সভ্যতার। কিন্তু এবার সেই ভ্রান্তি দূর হল। জানা গেল, ওই গহ্বরের সৃষ্টি আরও আগে।
সারা পৃথিবীতেই এই ধরনের ২০১টি গহ্বর রয়েছে যা সৃষ্টি হয়েছে গ্রহাণু আছড়ে পড়ায়। মনে করা হয়, এই ধরনের ঘটনার পৃথিবীর বিবর্তনে ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। প্রসঙ্গত, ডাইনোসরদের অবলুপ্তির পিছনেও ছিল এমনই গ্রহাণুর আছড়ের পড়ার ঘটনা! এছা়ড়াও চাঁদের সৃষ্টি, সমুদ্রের গঠন থেকে শুরু করে হাইড্রোকার্বন বা পৃথিবীর ধাতব ভাণ্ডার তৈরির পিছনেও রয়েছে গ্রহাণুর অপরিসীম ভূমিকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.