সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব উষ্ণায়নের ধারা অব্যাহত থাকবে আগামী বছরও। আরও উষ্ণ হবে পৃথিবী। গড় তাপমাত্রা ১.১১ ডিগ্রি বেশি থাকবে। নতুন বছরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এমনই পূর্বাভাস শোনালেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে পরপর ৬ বছর বিশ্ব উষ্ণায়নে রেকর্ড তৈরি হবে। এর নেপথ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের অতিরিক্ত নির্গমনকে দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা।
সদ্যই শেষ হয়েছে মাদ্রিদের জলবায়ু সম্মেলন। সেখানকার আলোচনা থেকে উঠে আসা বিষয়গুলিকে পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণের পর বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন পরিবেশবিজ্ঞানীদের একাংশ। যে ক’টি কারণের জন্য বিশ্ব উষ্ণায়নের দাপট অব্যাহত, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য –
১. গত দশক ছিল সবচেয়ে বেশি উষ্ণ।
২. এল নিনোর প্রভাব পৌঁছে গিয়েছে বরফ প্রদেশের আন্টার্কটিকাতেও।
৩. ২০১৫ সালের পর শিল্পাঞ্চলগুলিতে তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙতে চলেছে ২০২০।
৪. তার পরবর্তী সব ক’টি বছরে তাপমাত্রার পারদ নির্দিষ্ট সীমা পেরিয়েছে।
৫. একের পর এক এল নিনোর প্রভাবে ২০১৬ সালটি ছিল উষ্ণতম।
এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস, ২০২০ সালেও চার বছর আগের মতো দাপট দেখাবে এল নিনো। যার প্রভাবে আন্টার্কটিকার বরফ গলনের হার বাড়বে তো বটেই, প্রশান্ত মহাসাগরের জলতল বৃদ্ধির কারণে গোটা বিশ্বের তাপমাত্রার পারদ চড়বে। আবহাওয়া বিজ্ঞানী ডক্টর ডাও স্মিথের কথায়, ”২০২০ সালের আবহাওয়ার পূ্র্বাভাস বলছে, ছ’টি উষ্ণতম বছরের মধ্যে আগামী বছরটিও চিহ্নিত হতে চলেছে। গত প্রতিটি বছর গড়ে ১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড করে তাপমাত্রা বেশি ছিল। যার মূল কারণ, কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ।” তাঁদের আশঙ্কা, গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের সীমা পেরলে তা একেবারে বিপদের দোরগোড়ায় পৌঁছবে। তাই উষ্ণতা কমানোর জন্য উন্নত দেশগুলির কাছে তাঁরা আবেদন জানাতে চান।
আসলে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে শুরু করে গ্লাসগো কিংবা হালফিলের মাদ্রিদ সম্মেলনে বোঝা গিয়েছে, পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে যার যতটা মনোযোগী হওয়ার কথা, দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার কথা, তারা মোটেও তা করেনি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবহেলা করেছে ব্রিটেন। কোনওভাবেই শিল্পক্ষেত্রকে বিস্তৃত করার ক্ষেত্রে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির কথা মানেনি তারা। এই কারণে ব্রিটেনকে সতর্কও করেছে জলবায়ু পরিবর্তন কমিটি। নিজেদের স্বার্থেই ব্রিটেনের সাবধান হওয়া উচিত বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন তারা। ব্রিটেনের হুঁশ ফিরবে কি না, জানা নেই। তবে আগামী বছরও যে উষ্ণায়নের দাপটে পৃথিবীকে পুড়তে হবে, সেই পূর্বাভাস ভাবাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.