সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলে প্রাণের সন্ধান করতে, তার পাথর-মাটির রাসায়নিক বিশ্লেষণ করতে সবে পাড়ি দিয়েছে নাসার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন রোভার পারসিভিয়ারেন্স (Perseverance)। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে পৌঁছে তারপর সেখান থেকে নানা খুঁটিনাটি তথ্য দেবে। তবে তার আগে ব্রিটিশ, মার্কিন বিজ্ঞানীদের প্রকাশিত রিপোর্টে মঙ্গল সম্পর্কে মিলল নতুন তথ্য। বিজ্ঞানীরা জানালেন, মঙ্গলের ঢালু উপত্যকাগুলোর জলস্রোতের উৎস নদী নয়, হিমবাহ (Glaciers)।
নেচার জিওসায়েন্সে নতুন প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, এক সময়ে মঙ্গল অত্যন্ত উষ্ণ আবহাওয়া ছিল। তার জেরে হিমবাহ গলে জলে ভরেছে লাল গ্রহের মাটি। ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়ার অধীনে কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা মঙ্গলের অন্তত ১০ হাজার উপত্যকা নিয়ে গবেষণা করেছেন। পৃথিবীর যে কোনও উপত্যকার সঙ্গে তার তুলনা করে তাঁরা বুঝেছেন, ওই বাঁকের সঙ্গে কেবলমাত্র হিমবাহ গলনে তৈরি উপত্যকার মিল আছে। গবেষক দলের সদস্য আন্না গ্যালোফ্রের কথায়, ”গত ৪০ বছর ধরে অর্থাৎ যখন মঙ্গলে উপত্যকার হদিশ পাওয়া গিয়েছে, তখন প্রাথমিকভাবে ভাবা হয়েছিল যে এখানে নদীখাত ছিল। কিন্তু পরে বোঝা গিয়েছে, হিমবাহ গলনের ফলে ওই বাঁক তৈরি হয়েছে।”
রিপোর্টে গবেষকরা দাবি করছেন, প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে মঙ্গলে উপত্যকা তৈরি হয়েছিল। তা ছিল বরফঢাকা ভূমির উপর। পরিবেশ বদলের জেরে এমন পরিবর্তন হয়েছে বলে দাবি রিপোর্টে। আর এ থেকেই স্পষ্ট, মঙ্গল সৃষ্টির আদিকালে অনেকটাই শীতল ছিল। পরে তার উষ্ণতা বেড়েছে। ফলে হিমবাহের গলন হয়েছে।
আর এখানেই বিজ্ঞানীরা বেশি জোর দিতে চান। কারণ, ওই লক্ষ লক্ষ বছর আগে মঙ্গলের আবহাওয়া কেমন ছিল, তা ঠিকমতো জানতে পারলে বোঝা যাবে, সেখানে আদৌ কখনও প্রাণধারণ সম্ভব ছিল কি না। ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়ার গবেষণায় উল্লেখ, বরফের স্তর মাটির গর্ভের জলের স্থায়িত্ব বাড়ায়। সৌর বিকিরণ থেকে রক্ষা করে জমি। আর তা অনেক বছর আগেই উষ্ণতার ফলে গলে মঙ্গলের মাটির প্রকৃতি পালটে দিয়েছে অনেকটা। তবে এ সবই তাত্বিক গবেষণা। আসল খোঁজ দেবে নাসার রোভার পারসিভিয়ারেন্স। সেই আশাতেই দিন গুনছে বিজ্ঞানী মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.