সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, আর মাত্র কয়েক দশকের ব্যাপার। তারপরই পৃথিবী থেকে লুপ্ত হবে ‘কেলোনয়েডিস হুডেনসিস’ প্রজাতি। দিয়েগোর কানে বোধহয় কথাটা গিয়েছিল। তাই গোটা প্রজাতিকে বাঁচানোর গুরুদায়িত্ব সে তুলে নিয়েছিল নিজের কাঁধে। দিয়েগোর জেদের কাছে কার্যত হার মানল প্রকৃতি। সে একাই তার গোটা প্রজাতিকে বাঁচিয়ে দিল।
কে এই দিয়েগো? মানুষ নয়, দিয়েগো এক কচ্ছপের নাম। প্রজাতি- ‘কেলোনয়েডিস হুডেনসিস’। ১৯৬০ সালে এই প্রজাতিকে বাঁচানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন পরিবেশবিদরা। কারণ ক্রমশ লোপ পাচ্ছিল এই প্রজাতির কচ্ছপ। লাল তালিকাভুক্ত হয়েছিল তারা। পরিস্থিতি ক্রমশ বেশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল। আমেরিকার নিউ মেক্সিকোর এসপ্যানোলাতে মাত্র ২টি পুরুষ ও ১২টি স্ত্রী কেলোনয়েডিস হুডেনসিস কচ্ছপ বেঁচে ছিল। তাদের বাঁচাতে সবরকম চেষ্টা চালানো হয়। পুরুষ ও স্ত্রী কচ্ছপের মধ্যে যাতে ঘনঘন সঙ্গম হয়, সেই চেষ্টাও বাদ যায়নি।
তখনই ময়দানে নামে দিয়েগো। ক্যালিফর্নিয়ার সান দিয়েগো চিড়িয়াখানা থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় লাতিন আমেরিকার গ্যালাপাগোস দ্বীপে। সেখানে গ্যালাপাগোস ন্যাশনাল পার্কে তাকে রাখা হয়। শুরু হয় প্রজনন করিয়ে এই প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা। আর তখন থেকেই যেন ম্যাজিকের শুরু। দেখা যায়, অল্পে সন্তুষ্ট হয় না দিয়েগো। তাঁর যৌন ইচ্ছা প্রবল। সঙ্গমে কোনও অনীহা নেই তার। দিয়েগোর এই তীব্র যৌন ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত বাঁচিয়ে দিল ‘কেলোনয়েডিস হুডেনসিস’ প্রজাতিকে। বিলুপ্তপ্রায় তালিকা থেকে নাম কাটা গেল এই প্রজাতির। ১৯৬০ সাল থেকে এতদিন পর্যন্ত প্রায় হাজার দুই কেলোনয়েডিস হুডেনসিস কচ্ছপের জন্ম হয়েছে। আর তার মধ্যে অধিকাংশেরই বাবা দিয়েগো।
দিয়েগোর এখন বৃদ্ধ হয়েছে। বয়স ১০০ ছাড়িয়েছে। কাজ ফুরিয়েছে তার। যৌনতাতেও ভাঁটা এসেছে। তাই এবার তাঁকে ফিরে যেতে হবে পৈত্রিক ভিটেয়। মাস দুয়েকের মধ্যেই এসপ্যানোলা দ্বীপে তাঁকে ফেরত পাঠানো হবে। শেষ বয়স একটু বিশ্রামেই কাটুক না হয়!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.