ধীমান রায়, কাটোয়া: হাতি সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। বাংলার বনকর্মীদের হাতে এল কেন্দ্রের পুরস্কার। পূর্ব বর্ধমান জেলার জঙ্গলমহল আউশগ্রামের (Aushgram) আলেফনগর বনসুরক্ষা কমিটিকে ‘গজগৌরব’ পুরস্কার দিল কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক । শনিবার ছিল ‘বিশ্ব হস্তি দিবস’ (World Elephant Day)। এদিন ওড়িশার ভুবনেশ্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হল। পুরস্কার নিতে তার আগে ওড়িশা রওনা দিয়েছিলেন আউশগ্রাম বিটের বন-আধিকারিক হিমাংশু মণ্ডল এবং আলেফনগর বনসুরক্ষা কমিটির প্রতিনিধি। তাদের হাতে এই শংসাপত্র ও আর্থিক পুরস্কার তুলে দেওয়া হল। জানা গিয়েছে, এবছর কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একমাত্র আলেফনগর বনসুরক্ষা কমিটি এই পুরস্কার (Award) অর্জন করেছে।
পূর্ব বর্ধমান (East Burdwan)জেলা বন আধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, “আমাদের বনকর্মীদের পাশাপাশি বনসুরক্ষা কমিটি যা কাজ করে এটা তারই স্বীকৃতি। এটা আমাদের কাছে গর্বের। শুধুমাত্র হাতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রেই নয়, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং বনসৃজনের ক্ষেত্রে আউশগ্রাম ভীষণ ভাল কাজ করে আসছে। এই সম্মান সবাইকে উৎসাহ জোগাবে।”
কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক (Ministry of Environment, Forest and Climate Change)হাতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে। জঙ্গলমহলের মধ্যে রেলপথে বা সড়কপথে হাতির দল মাঝেমধ্যেই চলে আসে। দুর্ঘটনায় হাতির মৃত্যুর ঘটনাও প্রায়ই ঘটে। বস্তুতপক্ষে এসব রুখতে হাতির উপর নজরদারি জরুরি। কোনও জঙ্গল থেকে লোকালয়ে হাতির দল বেড়িয়ে এলে তাদের জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর দায়িত্ব হুলাপার্টির দল বা বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা বিশেষভাবে পালন করে থাকে। আর হাতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে উৎসাহ প্রদান করতে কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক ‘গজগৌরব’ পুরস্কার চালু করেছে।
উল্লেখ্য, গত দেড় দুই বছরের মধ্যে আউশগ্রামের (Aushgram) জঙ্গলে হানা দিয়েছিল বাঁকুড়া থেকে আসা হাতির পাল। গত বছরেও একবার একসঙ্গে প্রায় ৬০ টি হাতির দল আউশগ্রামে আসে। রাজ্য বনবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এভাবে গত দেড়-দুই বছরের মধ্যে প্রায় ৯ বার বাঁকুড়া থেকে দামোদর পেড়িয়ে হাতির দল আউশগ্রামে আসে। জেলা বনআধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, “প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের হুলাপার্টির দল ওই সমস্ত হাতিদের নিরাপদে বাঁকুড়ার (Bankura) জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে সফল হয়েছে। এছাড়া হাতি বা স্থানীয় এলাকাবাসীর তেমন ক্ষয়ক্ষতি কিছু হয়নি। হাতির কারণে প্রানহানির ঘটনাও আউশগ্রামে ঘটেনি। এটাই আমাদের সাফল্য।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.