ছবি: রঞ্জন মাইতি।
সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: চিরাচরিত প্রথা বা ঐতিহ্য মেনে ধর্মাচরণ পালন বা উৎসব হোক। কিন্তু বন্যপ্রাণী হত্যা যেন না হয়। ফলহারিনী কালীপুজোর বিশেষ তিথিতে আদিবাসীদের শিকার উৎসবে যাতে বন্যপ্রাণ ধ্বংস না হয়, সেদিকে নজর রেখে এমনই বার্তা দিলেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। তিনি বলেন, ‘‘উৎসব পালন হোক যার যার মতো করে। কিন্তু তার আড়ালে বন্যপ্রাণ শিকার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। বনদপ্তর সজাগ রয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও বন্যপ্রাণ হত্যার বিরুদ্ধে এগিয়ে এসেছে।’’
তবে বনদপ্তর থেকে শুরু করে রেল ও জেলা প্রশাসন একযোগে কাজ করে গত দু’বছর ফলহারিনী কালীপুজোয় একটি বন্যপ্রাণীরও ক্ষতি হয়নি। বনদপ্তর পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলিকে নিয়ে তৎপর থাকায় রক্ষা পেয়েছে বন্যপ্রাণ (Wild Animals)। এই বিশেষ তিথিতে শিকার উৎসব ঘিরে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ বন্যপ্রাণী শিকারে (Hunting) নামেন। তাতে বহু নিরীহ বন্যপ্রাণ ধ্বংস হয়। এবার আইন মেনে বন্যপ্রাণী হত্যা ঠেকাতে গোড়া থেকেই তৎপর বনবিভাগ। ফলে বহু শিকারি দলকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে, হচ্ছে। ফলে প্রাণে বেঁচেছে বহু বিপন্ন ও বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী।
শিকার উৎসব আদিবাসী সম্প্রদায়ের বহু পুরানো ধর্মীয় রীতি। কিন্তু এই শিকার উৎসবের সুযোগ নিয়ে চোরাশিকারিরা ফলহারিনী কালীপুজোর সময় তৎপর হয়ে ওঠে। তারা আদিবাসী (Tribal)সম্প্রদায়ের মানুষের উৎসবের আড়ালে নিজেদের বেআইনি কাজ সেরে বহু প্রাণীর চামড়া পাচার (Poaching) করে। তা রুখতে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, মেচেদা, কোলাঘাট থেকে শুরু করে উলুবেড়িয়া, বাগনান স্টেশনেও কড়া নজরদারি চালানো হয়। বনদপ্তরের এই পদক্ষেপে এগিয়ে এসেছিল বহু পরিবেশপ্রেমী সংগঠন। শুধু তাই নয় প্রশাসন ও বনদপ্তরের নজর এড়িয়ে নদীপথেও অনেক শিকারি জেলায় প্রবেশের চেষ্টা করে। আর শিকারিদের এই প্রয়াস আটকাতে এবার হাওড়া মেদিনীপুরের জল সীমানা সুরক্ষিত করতে নৌকার মাঝি-মাল্লা থেকে নৌকায় পারাপার করা যাত্রীদের সচেতন করার উদ্যোগী নেওয়া হল। বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের পক্ষ থেকে নদীর ঘাটগুলিতে গিয়ে সেখানকার মাঝি মল্লাদের সঙ্গে বৈঠক করার পাশাপাশি তাদের এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া জেলায় স্বাভাবিক বনাঞ্চল নেই বললেই চলে। অথচ এই দুই জেলা জুড়ে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) পশু মেছো বিড়াল, ভাম, কচ্ছপ, গোসাপ, নানান প্রজাতির সাপ ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এছাড়া সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নদীতে কুমির দেখা দিয়েছে। ফলহারিণী কালীপূজাকে উপলক্ষ করে শিকার উৎসবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন মেছো বিড়াল, ভাম, কচ্ছপ, গোসাপ, নানান প্রজাতির সাপ ও পাখি শিকার করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.