Advertisement
Advertisement
Purulia

‘দাবানলে’ পুড়ছে পুরুলিয়ার একশো হেক্টরের বেশি জঙ্গল, চিন্তা বাড়াচ্ছে শুষ্ক আবহাওয়া

রাত জেগে আগুন নেভানোর কাজ করছেন বনকর্মী, আধিকারিকরা।

Forest fire in Purulia: the situation is worsening due to dry weather |Sangbad Pratidin

ছবি: অমিত সিং দেও।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 14, 2021 9:38 pm
  • Updated:March 14, 2021 9:38 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: গড়পঞ্চকোট থেকে অযোধ্যা পাহাড়। বাঘমুন্ডি থেকে বান্দোয়ান। প্রায় সাতদিন ধরে পুরুলিয়ার (Purulia) বনাঞ্চল জুড়ে ‘দাবানল’এ পুড়ে গিয়েছে একশো হেক্টরের বেশি বনাঞ্চল। কালবৈশাখী ঝড়–বৃষ্টিতে আগুন নিভে যাওয়ায় খানিকটা স্বস্তি ফিরেছিল ঠিকই। কিন্তু নতুন করে চিন্তা বাড়ছে বনদপ্তরের। কারণ, চোখ রাঙাচ্ছে যে আবহাওয়া। আর দু’–একদিনের মধ্যেই পুরুলিয়ার শুষ্কতা আরও বাড়বে বলে রিপোর্ট দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ফলে উদ্বেগে পুরুলিয়া বনবিভাগ।

ফি বছর এই জেলায় শীত শেষ হলে জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা রেওয়াজ হয়ে গেলেও সাম্প্রতিক কালে এত বিপুল বনাঞ্চল জুড়ে অগ্নিকাণ্ডের (Forest Fire) উদাহরণ নেই। এখনও পর্যন্ত যা রিপোর্ট এসেছে, তাতে পুরুলিয়া বিভাগের বনাঞ্চলেই আশি হেক্টরের বেশি জঙ্গলে আগুন লাগে। আগুন লেগেছে কংসাবতী উত্তর ও দক্ষিণ বনবিভাগেও। এক–একদিনেই পুরুলিয়ার এই বনাঞ্চলগুলিতে দশ–বারো জায়গায় বেশি আগুন লাগছে। কর্মী সংকটে জেরবার বনদপ্তরের এখন মাথায় হাত। তার মধ্যেই অবশ্য রাত জেগে রেঞ্জ অধিকারিক-সহ ডিএফও-রা আগুন নেভাচ্ছেন। নির্বাচন পর্বের মধ্যেও তদারকি করতে হচ্ছে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ব্যক্তিগত জমিতেও বৃক্ষরোপনের প্রস্তাব, পরিবেশ রক্ষায় আইন বদলের ভাবনা কেন্দ্রের]

আসলে অযোধ্যা পাহাড় যেভাবে পুড়ে যাচ্ছে তাতে সোশ্যাল সাইটে ঝড় উঠেছে। তবে জঙ্গলের আগুন যাতে রোখা যায়, তার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে বনদপ্তর। তবুও সার্বিক ভাবে আগুন থেকে জঙ্গলকে বাঁচাতে পারছে না। যেমন বনজ সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তেমনই পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে বন্যপ্রাণ। এখন মহুলের মরশুম। ফলে আগুনে এই ফলেরও বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। পুরুলিয়া বিভাগের ডিএফও রামপ্রসাদ বদানা বলেন, “এখনও পর্যন্ত পুরুলিয়া বিভাগে আশি হেক্টরের বেশি বনাঞ্চলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। কিছু বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণের ক্ষতি হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট হিসাব এখনও হাতে পাইনি। কাজ চলছে।” বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার তিন বনবিভাগ মিলিয়ে প্রায় একশ হেক্টরের বেশি বনাঞ্চলে আগুন লাগে।

Prurulia
ছবি: অমিত সিং দেও

কিন্তু কেন এভাবে পুরুলিয়ায় হেক্টরের পর হেক্টর জঙ্গল পুড়ে যায়। শীতের সময় থেকে ঝরা পাতা মাটিতে পড়ে শুকনো হয়ে থাকে। ফলে বিড়ি–সিগারেট খেতে গিয়ে দেশলাই কাঠি জঙ্গলে ফেলে দিলেই শুকনো পাতায় কার্যত দাবানলের চেহারা নেয়।এছাড়া এই সময় চোরাশিকারীরা শুকনো পাতায় সহজে আগুন জ্বালিয়ে বন্যপ্রাণ শিকার করে। জঙ্গলের পর জঙ্গল আগুন ধরিয়ে তৈরি করে কাঠ–কয়লা। আর তাতেই পুড়ে ছারখার হয়ে যায় অযোধ্যা পাহাড়ের জঙ্গল থেকে বান্দোয়ানের বনাঞ্চল।

[আরও পড়ুন: রাজনৈতিক জনসভার ঠেলায় দূষণে জেরবার ব্রিগেড, বাড়ছে কলকাতার বিপদ]

আগে থেকে কেন ব্যবস্থা নেয় না বনদপ্তর? এই প্রশ্নের অবশ্য কোন উত্তর মেলেনি। এবার পুরুলিয়া বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে অযোধ্যা, বাঘমুন্ডি, মাঠা বনাঞ্চলে। একইভাবে কংসাবতী উত্তর বনবিভাগের গড়পঞ্চকোট, সাতুড়িতেও। আগুন নেভাতে প্রতি রেঞ্জেই একাধিক টিম তৈরি করে জঙ্গলের মুখে পর্যটক থেকে সাধারণ মানুষজনের তল্লাশি চলছে। বিড়ি, সিগারেট, দেশলাই-সহ কোনও দাহ্য পদার্থ থাকলেই নিয়ে নিচ্ছে বনদপ্তর। তারপর জঙ্গলে ঢোকার অনুমতি মিলছে। সারা দিন রাত এভাবে জঙ্গল জুড়ে এখন পাহারা চলছে বনদপ্তরের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement