ফাইল ছবি
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: পাচার রুখতে সোর্সের (Source) হাতে দেওয়া হবে অ্যান্ড্রয়েড! আর্থিক পরিস্থিতি ভাল হলে আপাতত তেমনই পরিকল্পনা বনদপ্তরের। ইদানিং পরপর ধরা পড়েছে পাচার হওয়া বনটিয়া। সদ্য একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে পাচার হওয়া শাল, সেগুন কাঠের গুঁড়ি। মাঝে পাওয়া গিয়েছিল প্যাঙ্গোলিনের গায়ের আঁশ। টিয়াকে পোষ্য বানানোর পাশাপাশি পাচার হওয়া মূলত কাজে লাগে ঘর সাজানো বা আসবাব বানানোর কাজে। পাচার হওয়া কাঠের গুঁড়ি উঠবে নিলামে। কিন্তু এসব রুখতে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে বনদপ্তর? জানা যাচ্ছে, পরিচয় গোপন রেখে কিছু ‘সোর্স’ নিয়োগ করতে চাইছে তারা। মাসোহারা পাবেন তাঁরা। সেই সোর্সের হাতে দেওয়া হবে অ্যান্ড্রয়েড (Android) ফোন।
কীভাবে ব্যবহার করতে হবে? স্বাভাবিকভাবেই অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ব্যবহার নানাবিধ। ভাল ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) ব্যবহার করে তাকে নির্দিষ্ট জায়গায় পাঠানো – এই ফোন থাকলে তা স্রেফ বাঁ হাতের খেল। তেমন হলে পাচারকারী ব্যক্তি বা দলের ছবিও সুযোগ মতো তোলা সহজ হবে। এভাবেই কোনও পাচারের খবর বা ছবি বিভিন্ন মাধ্যমে সামনে এলে, তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে বনদপ্তরের কন্ট্রোল রুমে। তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে পারবে দপ্তরের রক্ষীরা। পাচার রুখতে এটিই আপাতত সবচেয়ে কার্যকর প্রক্রিয়া বলে মনে করা হচ্ছে। তার সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ও দ্রুতগতির গাড়ি বনকর্মীদের দেওয়ার ভাবনার কথা আগেই জানিয়েছিল বনদপ্তর। সেই গাড়ি বা সেই অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে থাকলে রক্ষীদের পক্ষেও সহজ হবে পাচার রোখা বা পাচারকারীদের মোকাবিলা করা।
এদিনই বনদপ্তর আলিপুরদুয়ারের বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গল থেকে পাচারের সময় ধরা পড়েছে ১২ লক্ষ টাকার শাল-সেগুন কাঠের গুঁড়ি বোঝাই একটি ট্রাক। গ্রেফতার করা হয়েছে ট্রাকচালক অবতার সিং নামে পাঞ্জাবের এক বাসিন্দাকে। এগুলি দক্ষিণ ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে জানা যাচ্ছে। ক’দিন আগেই পাচার হওয়ার মুখে স্থানীয় একটি নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে এমন বহু কাঠের গুঁড়ি। সেসব এখন নিলাম হওয়ার পালা। এইসব পাচার রুখতেই সোর্সের কথা ভাবা হয়েছে। যদিও এ প্রসঙ্গেই আর্থিক আনুকূল্যের কথা বলেছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর কথায়, “আমরা একাধিক পরিকল্পনা করেছি। জঙ্গলে পাচার রুখতে ‘সোর্স’ নিয়োগের ভাবনা তাদের মধ্যে একটি। তবে তার জন্য অর্থ দফতরের সবুজ সংকেত প্রয়োজন।”
এর মধ্যে দু’দিন আগেই উত্তরবঙ্গ থেকে পাচার হওয়ার মুখে ধরা পড়েছে ১৩ কোটি টাকার সাপের বিষ। তিনটি বেলজিয়াম গ্লাসের ক্রিস্টাল জারে করে তা পাচার করা হচ্ছিল। সেই বিষ আপাতত দপ্তরের জিম্মায় আছে। আদালতের অনুমতি মিললে তা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে যাবে দফতর। সেক্ষেত্রে এই বিষ থেকে ওষুধ তৈরি করার প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নিতে হবে দফতরকে। অন্যথায় তা নষ্টও করে দেওয়া হতে পারে। আপাতত বিষ যে অবস্থায় তা রয়েছে, হাওয়ার সংস্পর্শে না এলে তা সেভাবেই দীর্ঘদিন থাকবে বলে জানা যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.