সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে মানুষ! আনারসে বাজি পুড়ে গর্ভবতী হাতিকে খাওয়ানোয় নিন্দার ঝড় বয়েছে দেশ জুড়ে। ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন বিজেপি সাংসদ মানেকা গান্ধীও। তার জেরেই অবশেষে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে প্রশাসন।
প্রাণীকূলের শ্রেষ্ট হয়েও মানুষের আচরণ মাঝে মধ্যে অধমেরও নীচে চলে যায়। সীমাহীন নৃশংসতা প্রমাণ করে দেয় যে, মান ও হুঁশের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। করুণা, আবেগ, দয়া-মায়া নামক গুণগুলোর জলাজ্ঞলি দিয়ে মানুষের হিংস্র ও নৃশংস হওয়ার চরম প্রমাণ মিলেছে কেরালার মালাপ্পুরম (Kerala’s Malappuram) জেলায়। গর্ভবতী হাতিকে আনারসে বারুদ পুড়ে খাইয়ে তাকে মৃত্যুর কোলে ঢলতে দেখে পৈশাচিক আনন্দ পেয়েছেন কিছু মানুষ। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠেন অনেকেই। নিন্দার ঝড় বয়ে যায় নেট দুনিয়ায়। বিজেপি সাংসদ মানেকা গান্ধী ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, “এই ধরণের নৃশংস ঘটনা মালাপ্পুরমে আকছারই ঘটে। এটা সবথেকে হিংস্র জেলা। রাস্তার ধারে বিষ ছড়িয়ে রাখা হয় যাতে পাখি, কুকুর খেয়ে একসঙ্গে মারা যায়। “
It’s murder,Malappuram is famous for such incidents, it’s India’s most violent district.For instance, they throw poison on roads so that 300-400 birds & dogs die at one time: Maneka Gandhi,BJP MP&animal rights activist on elephant’s death after being fed cracker-stuffed pineapple pic.twitter.com/OtLHsuiuAq
— ANI (@ANI) June 3, 2020
অবশেষে আজ ঘটনায় জড়িত অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে প্রশাসন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ধারা অনুসারে মামলা দায়ের করা হয়। তবে, এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে জানা যায়। হাতির ময়নাতদন্তের (Autopsy) রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন বন দফতরের কর্তারা। মর্মান্তিক এই ঘটনার নিন্দা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়েছেন অনেকেই।
বনদপ্তরের আধিকারিক মোহন কৃষ্ণন জানান, “খিদের জ্বালায় লোকালয়ে চলে এসেছিল হাতিটি। তাকে আনারসে বারুদ ভরে দিলেও সে বুঝতে পারেনি। বিশ্বাস করে খেয়ে নেয়। মানুষের দেওয়া বাজি ভরা আনারস খেয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় হাতিটির মুখ ও জিভ। প্রবল যন্ত্রনায় লোকালয়ের চারপাশে ঘুরে বেড়ায় হাতিটি। কিন্তু কেউ তাকে বাঁচাতে আসেনি। তবে সেই যন্ত্রণা নিয়েও হাতিটি জঙ্গলে হেঁটে জঙ্গলে চলে যায়। রেগে গিয়ে গ্রামের একটি বাড়িতেও আঘাত হানেনি। এর প্রধান কারণ, সে তখন শুধুমাত্র নিজের সন্তানের চিন্তায় ব্যস্ত ছিল। মুখের এই যন্ত্রনা কমাতে হাতিটি একটি নদীতে নেমে যায়। মুখ ডুবিয়ে রাখে জলে। কিন্তু সেখানেই দাঁড়িয়ে থেকে মারা যায় সে।”
বনবিভাগের আধিকারিক মোহন কৃষ্ণন টুইটে লিখে বলেন, “দুটি কুনকি হাতি দিয়ে নদী থেকে এই হাতিটিকে তোলার চেষ্টা হলেও প্রথমে তার কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। নদীতে দাঁড়িয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে হাতিটি। তারপর হাতিটির দেহ ট্রাকে করে জঙ্গলে নিয়ে যান বনবিভাগের কর্মীরা, সেখানেই দাহ করা হয়।” ঈশ্বরের আপন দেশে এই আনাচার দেখে স্তম্ভিত গোটা দেশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.