সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিবেশ সংক্রান্ত কোনও এক প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়ার জন্য সাধারণের মতামত চেয়েছিল পরিবেশ মন্ত্রক। তার জন্য দেওয়া হয়েছিল একটি ই-মেল আইডি। তরুণ পরিবেশ কর্মীদের সংগঠন ‘ফ্রাইডে’জ ফর ফিউচার’ (Fridays for future India) সেই প্রকল্পে আপত্তি জানিয়ে মেল পাঠায়। পাশাপাশি পরিবেশ মন্ত্রকের ওই ই-মেল আইডি’তে এমনই আরও অজস্র মেল জমা হয়। তাতেই ক্ষুব্ধ পরিবেশ মন্ত্রক পুলিশের কাছে অভিযোগ করে বসে যে মেলের প্রেরকরা দেশের জন্য বিপজ্জনক। তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হোক। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এরপর অবশ্য দিল্লি পুলিশ পিছু হঠে জানায়, পরিবেশ কর্মীদের উপর এমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।
সুইডিশ কিশোরী পরিবেশ কর্মী গ্রেট থুনবার্গের অনুপ্রেরণায় ভারতে জনা কয়েক তরুণ-তরুণী মিলে পরিবেশ রক্ষায় কাজ শুরু করে। ‘ফ্রাইডে’জ ফর ফিউচার ইন্ডিয়া’ নামে সংগঠনটি নিজেদের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল ভালভাবেই। কম সময়ের মধ্যে জনমানসে বেশ প্রভাবও ফেলেছিল। এখন পরিবেশ মন্ত্রকের অভিযোগ, FFFI’এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েই কেন্দ্রের ওই পরিবেশ প্রকল্পের বিরোধিতা করছেন বহু সাধারণ মানুষ।
আর সেখানেই কেন্দ্রের আশঙ্কা, সংগঠনটি পরিবেশ রক্ষার নামে আসলে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে। দেশবিরোধী আন্দোলনের আঁচ ছড়াচ্ছে। যার ফল পরিবেশ মন্ত্রকে এত বেশি সংখ্যক ই-মেল আসা। এই আশঙ্কা থেকেই তরুণ পরিবেশ কর্মীদের বিরুদ্ধে UAPA বা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়েরের জন্য দিল্লি পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানায় আবেদন জানায় প্রকাশ জাভড়েকরের মন্ত্রক। এমনকী FFFI’এর ওয়েবসাইটটিও বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলে।
অভিযোগ, কেন্দ্রের আবেদন পেয়ে দিল্লি পুলিশ অতি তৎপর হয়ে ওঠে। তরুণ পরিবেশকর্মীদের নোটিস পাঠায় যে তাঁদের বিরুদ্ধে UAPA ধারায় মামলা জারি হতে পারে। বিনা নোটিসে ব্লক করে দেওয়া হয় ফ্রাইডে’জ ফর ফিউচার ইন্ডিয়ার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটও। এতেই খেপে ওঠেন পরিবেশ কর্মীরা। গ্রেটা থুনবার্গের কাছেও এই খবর পৌঁছয়। সে টুইট করে ভারতের পরিবেশ কর্মীদের বিরুদ্ধে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় সকলকে।
Please read, share and support Fridays For Future India! https://t.co/3FyYLLiYK6
— Greta Thunberg (@GretaThunberg) July 23, 2020
পরিবেশ কর্মীদের কীভাবে জঙ্গিদের সঙ্গে তুলনা করে UAPA ধারায় মামলা দায়েরের আবেদন করতে পারে কেন্দ্র? এই প্রশ্ন তুলে গর্জে ওঠে মানবাধিকার সংগঠন এবং বিরোধী রাজনৈতিক মহলও। প্রাক্তন পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশ থেকে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি – সকলেরই বক্তব্য, কোনও বিরোধিতা গ্রহণ করার মতো উদারতা নেই বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের। তাই এমন এক পদক্ষেপ। সমালোচনার মুখে পড়ে দিল্লি পুলিশ বিষয়টি নিয়ে পুনর্বিবেচনার পথে হেঁটেছে। সাইবার ক্রাইম শাখার ডিসি জানিয়েছেন, পরিবেশ কর্মীদের দেওয়া নোটিসে ভুল ছিল, তা বুঝেই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে একটি প্রকল্পের বিরোধিতায় বেশি সংখ্যক ই-মেল আসায় কেন্দ্রের এমন এক পদক্ষেপের সমালোচনা চলছে সর্বস্তরেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.