সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাছের আড়ালে, গুহার ভিতরে লুকিয়ে থাকার প্রবণতা রয়েছে হস্তিকুলের (Elephant) অনেকের। তাছাড়া নির্দিষ্ট বিচরণক্ষেত্রের বাইরেও অনেক সময় তারা ঘুরে বেড়ায়। তাই জঙ্গলে ঢুকে তাদের সুমারির কাজ চালানো সহজ নয় মোটেও। এই সমস্যা মেটাতে এবার অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করতে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার মহাকাশ থেকে বিশেষ প্রযুক্ত ব্যবহার করে হবে হাতি গণনার কাজ। যন্ত্রের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কেউ কোথাও ঘাপটি মেরে থাকতে পারবে না। সম্প্রতি হাতি গণনার কাজে এই পদ্ধতি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা।
কীভাবে কাজ হবে এই প্রযুক্তিতে? জানা গিয়েছে, পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ (Satellite) প্রদক্ষিণ করছে। এই উপগ্রহটিতেই বিশেষ ক্যামেরা লাগিয়ে হাতিদের বাসস্থান খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ডক্টর ওলগা ইসুপুভা নামে এক বিজ্ঞানীর কথায়, ”এর জন্য মেশিনকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ওর সফটওয়ারে একটা অ্যালগরিদম ইনস্টল করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ও বুঝতে পারবে যে কোনটা হাতি আর কোনটা হাতি নয়।”
আফ্রিকার ঘন জঙ্গলে বিশেষ রং দেখে হাতিদের অস্তিত্ব চিহ্নিত করে তার ছবি পাঠাচ্ছে স্যাটেলাইটটি। সেই ছবি বিজ্ঞানীদের সাহায্য করছে হাতিদের খুঁজে বের করতে। বলা হচ্ছে, মেঘমুক্ত আকাশ থাকলে একদিনে ৫০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালাতে পারে স্যাটেলাইটের শক্তিশালী ক্যামেরা। এতে সহজে পাচারকারীদেরও ধরে ফেলা সম্ভব।
তবে এই প্রযুক্তিতে কাজের কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। সীমান্ত এলাকায় যেখানে হাতিদের বসবাস বেশি, সেখানে এই স্যাটেলাইট ইমেজে গণনার কাজ করা যাবে না। কারণ, নিয়মানুযায়ী, সীমান্ত এলাকায় স্যাটেলাইট নজরদারিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে এই সীমাবদ্ধতা নিয়েও স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পৃথিবীর বাইরে থেকে হাতিগণনার কাজ করা অনেকটা এগিয়ে যাওয়া বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, করোনা কালে জঙ্গলে ঢুকে খোঁজাখুঁজি না করে এভাবে কোনও বন্যপ্রাণীর অবস্থান নির্ধারণ করা অনেক সহজ।
এমনিতেই প্রাণীবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির তেমন ব্যবহার নেই। এখন হাতিসুমারিতে এই স্যাটেলাইট ছবির সাহায্য নেওয়ায় এই ক্ষেত্রেও প্রযুক্তির প্রয়োগ করা হল বলে মনে করছে বিজ্ঞানী মহল, যাতে আদতে সুবিধাই হচ্ছে। আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতিতে হাতি গণনার কাজ হবে। এর সাফল্য দেখে পরে বাণিজ্যিকভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহারে সিলমোহর দেওয়া হবে বিভিন্ন বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংস্থার তরফে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.