অরূপ বসাক, মালবাজার: চা বাগানের মধ্যে দিয়ে যাওয়া হাতির করিডরে ব্লেডযুক্ত তারের বেড়া দিয়ে ঘেরার উপরে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু তা অমান্য করেই সীমানা ঘেরায় ব্যবহার হচ্ছে ব্লেড তার। আর তাতেই পেরতে গিয়ে জখম হচ্ছে হাতির শাবক থেকে অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা। যদিও চা বাগান কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নিজেদের দায় উড়িয়ে দিচ্ছেন।
তবে ব্লেড তার দিয়ে বাগান ঘেরায় সেখান দিয়ে যেতে গিয়ে আহত হচ্ছে হাতির দল। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পরিবেশ প্রেমী সংগঠনগুলি। চালসার পরিবেশ প্রেমী সংগঠক মানবেন্দ্র দে সরকার, ওদলাবাড়ির পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ন্যাসের কো অর্ডিনেটর রাসেল সরকাররা বলছেন, “এরকম ব্লেড তারের বেড়া দেওয়া অনুচিত। এতে শুধু বনের পশুপাখি আহত হয় তাইই নয়, গবাদি পশুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গবাদি পশুর চিকিৎসা সম্ভব হলেও বনের হাতি, চিতাবাঘ কিংবা বাইসনের চিকিৎসা হয় না। ওরা জখম অবস্থাতেই ঘুরে বেড়ায়। পরে সেপ্টিক হয়ে মারা যায়। অবিলম্বে এসব সরিয়ে নেওয়া উচিত।”
কয়েক মাস আগে স্থানীয় দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হাতির করিডর নিয়ে কাজ করার সময় মাল ব্লকের রানিচেরা চা বাগান ও ডামডিম থেকে ওদলাবাড়ি পর্যন্ত বেশ কিছু এলাকায় ব্লেড তারের বেড়া লক্ষ্য করে। অথচ এই পথ সেই কবে থেকে হাতির যাতায়াতের জায়গা। এই পথ ধরেই হাতির পাল রানিচেরা, সাইলি, মিনগ্লাস চা বাগান হয়ে ভুট্টাবাড়ির জঙ্গলে যাতায়াত করে।
হাতি ও বন্যপ্রাণীর যাতায়াতের এহেন এক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় প্রায় কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ ধারালো ব্লেড তারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সড়ক ধরে ডামডিম থেকে ওদলাবাড়ি গেলে সড়কের দু’ধারে এই বেড়া নজরে আসবে। এই ব্যাপারে বনাধিকারিকদের কড়াবার্তা দিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আধিকারিকদের এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিতেও বলেছেন। মালবাজার মহকুমা শাসক বিবেক কুমার জানান, এব্যাপারে বিভিন্ন চা বাগানের সঙ্গে কথা হয়েছে। যাতে হাতিদের যাতায়াতের রাস্তায় ব্লেড তারের বেড়া না লাগায় চা-বাগান কর্তৃপক্ষগুলিকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। মাটিয়ালির বাতাবাড়ি ২ পঞ্চায়েতের প্রধান শেলি বেগম বলেন, “এ ব্যাপারে বিভিন্ন চা বাগান এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে চা বাগান ম্যানেজারদের বলা হয়েছে। যাতে কোনও বাগানে ব্লেড তার না লাগানো হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.