শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ১২৩ বছর আগে প্রথম খোঁজ মিলেছিল। ফের সেই অঙ্গুরীমাল প্রাণীর হদিশ বঙ্গের রায়গঞ্জের কুলিক অভয়ারণ্যে! পোশাকি নাম ইউটাইফিয়স নিকোলসন। বিশেষ এই কেঁচো ‘মাটির বন্ধু’ শুধু নয়, জৈব পদার্থ গ্রাস করে তা হজমের পর পুষ্টি সমৃদ্ধ ভার্মিকাস্ট নির্গত করে। যার সাহায্যে গাছ বেড়ে ওঠে তরতরিয়ে। এহেন কেঁচো দেখা যায় উত্তরাখণ্ডের দুন ভ্যালিতে। এবার সেই সরীসৃপের অস্তিত্ব এই বাংলায়। মাটিতে এ ধরনের কেঁচো পাওয়ার অর্থ, জীববৈচিত্র চাঙ্গা রয়েছে বঙ্গের রায়গঞ্জ অভয়ারণ্যে।
সম্প্রতি বঙ্গের বেশ কয়েকটি অভয়ারণ্যের মাটিতে সমীক্ষা চালায় জুলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। মিলেছে নানা ধরনের মাটির তলার জীব। সমীক্ষা হয়েছে, বোলপুরের বল্লভপুর অভয়ারণ্য, নদিয়ার বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্য, বনগাঁর বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং বর্ধমান রমনাবাগান অভয়ারণ্য। প্রতিটি অভয়ারণ্যের মাটি পরখ করে দেখা গিয়েছে, জীববৈচিত্রের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য।
জুলকিজাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর ডা. ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ডা. এন মারিমুথু, ডা.শাকুর আহমেদ। গোটা সমীক্ষায় পাঁচ অভয়ারণ্যের মাটি পরীক্ষা করে ১২টি গণের ৬ পরিবারের মোট ২২ প্রজাতির প্রাণী পাওয়া গিয়েছে। সর্বাধিক সংখ্যক প্রাণী পাওয়া গিয়েছে রায়গঞ্জ অভয়ারণ্যেই। জীববৈচিত্রের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্য। জুলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর ডা. ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রায়গঞ্জের অভয়ারণ্যে যে ধরনের কেঁচো মিলেছে, তা অভাবনীয়। এরা শুধু জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে না জীববৈচিত্রের ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা অপরিসীম। যেভাবে সারা বিশ্বজুড়ে কেঁচো সারের গুরুত্ব বাড়ছে, সেখানে এই ভূমিজ কীটের উপস্থিতি বঙ্গের কৃষিক্ষেত্রেও স্থায়ী সুরাহা করতে সক্ষম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.