সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়,দুর্গাপুর: মাটির তলা থেকে তোলা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ জল। আর তার জেরে জলস্তর নামছে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জায়গায়। যার প্রভাব পড়ছে কুয়োর জলে। নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে ট্যাপ কলগুলিও। জল সংকটে ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
দুর্গাপুর নগর নিগমের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজড়া, শোভাপুর কিংবা দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের ধবনী, লবনাপাড়া এলাকায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। লাউদোহা ও জেমুয়া এলাকাতেও একই সমস্যায় ভুগছেন বাসিন্দারা। বিজড়া, ধবনী কিংবা লাউদোহা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই ভূগর্ভস্থ জল বেআইনিভাবে তুলে বিক্রি করা বা কোনও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিয়ে তা বন্ধ করার পর কয়েকদিন সব ঠিক থাকছে। ফের চালু হয়ে যাচ্ছে এই বেআইনি কাজ। যথেচ্ছভাবে সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার করায় মাটির নীচের জল কমে যাচ্ছে। ফলে এই সব এলাকায় কুয়ো কিংবা কলে আর জল মিলছে না।
ধবনি গ্রামের বাসিন্দা জসীম মল্লিক জানান, ‘‘আগে কুয়ো খুঁড়লে ২৫ ফুট নিচেই জল পাওয়া যেত। সেই জল এখন পাওয়া যাচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ গভীর অর্থাৎ পঞ্চাশ-ষাট ফুট নিচে। তাও পর্যাপ্ত নয়।” একই অভিযোগ শোভাপুরের কমল হাজরার। তিনি বলছেন, “টিউবওয়েলগুলি এক,দু’বার চাপ দিলেই জল মিলত। এখন মিনিট দশেক ধরেও চাপ দিয়ে গেলেও সেই পরিমাণ জল মিলছে না।” বিজড়া গ্রামে বেআইনিভাবে জল তোলার অভিযোগে তিন জনের নামে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
একইভাবে ধবনি গ্রামেও অবৈধভাবে জল তোলা চলছিল। তবে প্রশাসনের অভিযানের ভয়ে আপাতত বন্ধ আছে জল উত্তোলন। দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক অনির্বাণ কোলের কথায়, “বিনা অনুমতিতে কোনওভাবেই মাটির নিচের জল ব্যবহার করতে দেব না। প্রশাসনের এই ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।” বহু নির্মীয়মাণ বহুতলেও কাজের প্রয়োজনে ব্যবহার হচ্ছে সাবমার্সিবল পাম্প। এটাও নজরে আছে প্রশাসনের। চলতি বছরে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মাটির নিচের জলস্তর আরও নেমেছে। এই সমস্যার কথা মেনেছেন দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের বিডিও মৃণালকান্তি বাগচিও। তিনি জানান, ‘‘যে সমস্ত এলাকায় এই রকম জল সমস্যা হচ্ছে, সেইসব এলাকায় সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হবে।” এখনই এই কাজ বন্ধ না করলে বিপদ যে আসন্ন, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট।
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.