সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দুর্গা ভাসানে টানা সাড়ে পাঁচ ঘন্টার ডিজে-র শব্দদানবে কান ঝালাপালা হল পুরুলিয়ার পুরশহর ঝালদার বাসিন্দাদের। একাদশীর রাতে লাগামহীন ডিজে বাজিয়ে বিসর্জন হওয়ায় পুজো কমিটিগুলিকেই কাঠগড়ায় তুলছেন তাঁরা। কারণ ঝালদা থানার পুলিশ পুজোর গাইড ম্যাপ প্রকাশ করে জানিয়ে দিয়েছিল, ‘অতি উচ্চশব্দের মাইক বিশেষত ডিজের ব্যবহার থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন।’ তাছাড়া একাধিকবার পুজো কমিটি গুলির সঙ্গে মহকুমা প্রশাসন বা পুলিশের বৈঠকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়। কিন্তু তারপরেও কোন কাজ হল না। পুলিশের সামনেই এই শব্দদানবের তাণ্ডব চললেও তা বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়নি কেউ।
একাদশীর সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলি ডিজে বাজিয়ে প্রতিমাকে নিয়ে বিরসা মোড়, আনন্দ বাজার, নামো পাড়া, বাঁধাঘাট, ডোমপাড়া, সোনার পাড়া এলাকা দিয়ে শোভাযাত্রা করে। তারপর লিহির বাঁধ, বাঁধা ঘাট, বুড়ির বাঁধ ও রানি বাঁধ এলাকায় ভাসান দেয়। চার নম্বর ওয়ার্ডের বিকে পাড়ার বাসিন্দা বীনাপাণি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যখন প্রতিমার শোভাযাত্রা যাচ্ছিল তখন ওই তীব্র আওয়াজে মনে হচ্ছিল কানে তালা লেগে গিয়েছে। বিছানা, ঘর যেন মনে হচ্ছে কাঁপছে।” একই কথা বারো নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দবাজার এলাকার ষাটোর্ধ্ব প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, “একাদশীর রাতে ঝালদা শহরে যা হল তাকে বিসর্জনের শোভাযাত্রা বলে না। আমাদের মতো বয়স্ক মানুষদের কাছে তো রীতিমতো যন্ত্রণার।”
কিন্তু প্রশ্ন পুলিশ সব কিছু চোখে দেখলেও কেন কোনও ব্যবস্থা নিল না? ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার বলেন, “দুর্গাপুজো আমাদের উৎসব। এভাবে শব্দ তাণ্ডবের মধ্য দিয়ে উৎসবে বিঘ্ন ঘটানো যায় না। এটা আগে পুজো কমিটিগুলিকে বুঝতে হবে। সেই সঙ্গে এই বিষয়ে পুলিশকে আরও কঠোর হতে হবে।” তবে ডিজের ব্যবহার এই শহরে নতুন নয়। পুলিশের বিধিনিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শীতের মরসুমে বনভোজনের সময়ও একই ছবি দেখা যায়। কিন্তু পুলিশ এই শহরে ডিজে বাজানো বন্ধ করতে পারে না বলেই অভিযোগ। যদিও ঝালদার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুমন্ত কবিরাজ বলেন, “এই বিষয়ে কোন অভিযোগ আসেনি। তবে যদি এইরকম ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে কালীপুজোয় যাতে এর পুনরাবৃত্তি না হয় সেই বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.