সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাভাস্রোত নাকি গলিত টুথপেস্ট! লালগ্রহে অগ্ন্যুৎপাতের যে গলিত লাভাস্রোত ভালভাবে পরীক্ষা করে এমনই বিস্ময়কর পর্যবেক্ষণ বিজ্ঞানীদের। সেই লাভায় নাকি পাথর জাতীয় কঠিন পদার্থ কম, বেশিরভাগটা জুড়েই সান্দ্র ধর্মযুক্ত কাদা। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন – Pahoehoe. গ্রহের এই বৈশিষ্ট্য দেখে তাঁরা অবাক। ‘জার্নাল নেচার জিওসায়েন্স’-এ এই গবেষণাপত্র প্রকাশ করে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের কথা জানানো হয়েছে। চেক অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স ইনস্টিটিউট অফ জিওফিজিক্সের বিজ্ঞানী ডক্টর পেট্রো ব্রঁজের এই আবিষ্কার মঙ্গলের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে গবেষণা আরও জটিল করে দিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীমহল।
প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী ড. পেট্রো ব্রঁজ সংবাদসংস্থা বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলছেন, “মহাকাশ থেকে টেলিস্কোপের সাহায্যে মঙ্গলের দিকে নজর রাখলে যা দেখা যাচ্ছে, তা আদৌ লাভা নাকি সাধারণ কাদা, সেটা বোঝার উপায় নেই। যতক্ষণ না কেউ ওখানে দিয়ে হাতুড়ি দিয়ে মাটি পরীক্ষা করছে, ততক্ষণ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে এই কাদা জাতীয় পদার্থের ব্যাপারটা আমাদের নতুন করে ভাবাচ্ছে।”
তবে ব্রঁজর এই পর্যবেক্ষণ মঙ্গল সম্পর্কে অন্য একটি দিক তুলে ধরছে। পৃথিবীতেও এধরনের আগ্নেয়গিরি রয়েছে, যেখানে লাভার বদলে শুধুই কাদা নির্গত হয়। সেই কাদার ধর্মও খানিক পৃথক। তাহলে কি পৃথিবীর সঙ্গে প্রতিবেশী লালগ্রহের মিল ক্রমশই বাড়ছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ভূ-বিজ্ঞানীরা আশাবাদী হচ্ছেন।
এর প্রকৃতি আলাদা করে বিশ্লেষণ করে অবশ্য বেশ কয়েকটি অমিল খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। ভূ-পৃষ্ঠের অগ্ন্যুৎপাতে যে কাদা নির্গত হয়, তার প্রকৃতি অনেকটা থালায় ঢেলে রাখা গ্রেভির মতো। কিন্তু মঙ্গলের এই কর্দমাক্ত পদার্থ খানিকটা কঠিন প্রকৃতির, তার মধ্যে ছোট ছোট কাঁকর থেকে যাওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা। মঙ্গল নিয়ে গবেষণারত এক বিজ্ঞানীরা কথায়, “এই কাদা জাতীয় পদার্থটি ঠান্ডা হয়ে গেলে উপরিতল একটু কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু ভিতরটা তরল থাকে। আর তাই মাঝেমধ্যে এর ভিতরকার উষ্ণতা বাড়লে, তরল জাতীয় পদার্থ ছিটকে বেরিয়ে আসে। তা গ্রহের মাটির উপর একটা স্তর তৈরি করে।” তবে এই কর্দমাক্ত পদার্থ সত্যিই কী, তা বুঝতে আরও অনেক গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।
বাসযোগ্য পৃথিবীর সঙ্গে প্রতিবেশী মঙ্গলের মিল পেতে গবেষণার অন্ত নেই। কখনও সামান্য জলের স্রোত দেখেই তাঁরা উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছেন। এবার লাভাস্রোতে খানিক মিল পেয়ে আরও আশাবাদী বিজ্ঞানী মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.