সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা ভাইরাস রুখতে বিশ্বব্যাপী মাস্ক ব্যবহার করছেন বহু মানুষ। তবে তা ব্যবহারের পর হংকংয়ের সমুদ্র সৈকতে ফেলে দিয়ে গিয়েছেন অনেকেই। ফলে হংকং সমুদ্র সৈকতে জলের সঙ্গেই ভেসে বেড়াচ্ছে সেই ব্যবহৃত মাস্কগুলি। এর জেরে সামুদ্রিক প্রাণীদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
হংকংয়ের ৭.৪ লক্ষ মানুষ করোনা আটকাতে প্রতিদিনই কিছু মাস্ক ব্যবহার করছেন। তবে তাদের মাস্ক ব্যবহারের পরেও ওই শহরে ১২৬ জন আক্রান্ত হন ও ৩ জন মারা যান। কিন্তু বহু ব্যবহৃত মাস্কগুলি নষ্ট করা হয়নি, তা কেউ ফেলে দিয়ে গিয়েছেন হংকংয়ের সমুদ্রে। ফলে খাবার মনে করে তা খেয়ে ফেলতে পারে সামুদ্রিক প্রাণীরা। শুধু মাস্ক নয়, সমুদ্র সৈকতে মাস্কের সঙ্গে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে প্লাস্টিক ও নানা আবর্জনাও। পরিবেশবিদদের মতে, চিনের মূল ভূখণ্ড থেকে এই সব আবর্জনা ও মাস্কগুলি সমুদ্রে এনে ফেলায় জলের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে পারে জীবাণু। কেবল দূষণ নয়, নষ্ট হতে পারে সামুদ্রিক প্রাণীজগতের ভারসাম্য। পরিবেশবিদদের মতে, আমরা গত ছয় থেকে আট মাস পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার্য মাস্ক ধ্বংস করেছি। তবে কিছু মানুষ নির্বোধের মত এই ধরনের কাজ করেছেন। এই একই চিত্র দেখা যায়, হংকংয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে অবস্থিত বিচ্ছিন্ন ও জনহীন সোকো দ্বীপপুঞ্জেও।
পরিবেশবিদরা পরিদর্শনে গিয়ে জানান, সোকো দ্বীপপুঞ্জে গিয়ে প্রথমে তারা ১০০ মিটার প্রসারিত ৭০টি ব্যবহৃত মাস্ক নিয়ে আসেন। তবে এক সপ্তাহ পরে গিয়ে সেখানে আরও ৩০টি মাস্ক পড়ে থাকতে দেখেন। আর তা দেখেই ভয় বাড়তে থাকে পরিবেশবিদদের মধ্যে। শহরের অন্যান্য প্রান্তে থাকা সমুদ্র সৈকতগুলিতে গিয়েও একই হাল দেখেন পরিবেশপ্রেমীরা। ইতিমধ্যেই হংকংয়ে প্লাস্টিক বর্জ্য, খাবার খেয়ে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বাক্স জমে দূষণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের ৬ লক্ষ টন আবর্জনার মধ্যে মাত্র অল্প কিছু পরিমাণ আবর্জনা রিসাইকেল করা সম্ভব হয়েছে।
হংকংয়ের এক পরিবেশপ্রেমী লরেন্স ম্যাককু বলেন, জঙ্গলে গিয়ে খুঁজলেও এরকম প্রচুর ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া মাস্ক খুঁজে পাওয়া যাবে। যা ধ্বংস করতে পারে বন্যপ্রাণকেও। পরিবেশ সংরক্ষণের একটি দল সম্প্রতি শহরের সমুদ্র সৈকতগুলি পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজেদের কাঁধে। তারাই জানান, একবার ব্যবহার করার এই মাস্কগুলি প্লাস্টিকজাত দ্রব্য দিয়ে তৈরি হওয়ায় তা সহজে নষ্ট করা সম্ভব নয়। মানুষ যদি শুধু নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে এই ধরনের কাজ করে থাকেন তাহলে তা ভুল হবে। তাই শুধুমাত্র নিজেদের নয় সকলকে এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করাই তাদের কাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.