সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এও যেন এক চিপকো আন্দোলন! অবশেষে আমজনতার বিক্ষোভের সামনে মাথা নত করল প্রশাসন। সাধারণ একটা বটগাছের জন্য বিক্ষোভের আঁচে পুড়বে মহারাষ্ট্র (Maharashtra) প্রশাসন, তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি তাঁরা। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেই একটানা বিক্ষোভের জেরেই বাঁচল ৪০০ বছরের প্রাচীন বট গাছ।
মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলায় একটি প্রধান সড়ক তৈরির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বটগাছটি। তাই সেটি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। কিন্তু বিক্ষোভের মুখে পড়ে শেষপর্যন্ত শনিবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে টুইট করে জানালেন, ঐতিহ্যবাহী গাছটি কাটা হবে না। তার পরিবর্তে সড়কের নকশায় বদল আনতে রাজি হয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথোরিটি অফ ইন্ডিয়া (এনএইচএআই)। সড়কপথ গাছের পাশ দিয়ে যাবে। প্রাচীন গাছটি অক্ষতই থাকবে।আদিত্য টুইটার আরও লেখেন, “সাংলি জেলায় ৪০০ বছরের প্রাচীন বটবৃক্ষটি রক্ষা করার জন্য আমরা এনএইচএআই কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিই। ওই গাছটির সঙ্গে বহু বিখ্যাত মানুষের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। কত লোক যারা ছোটবেলায় ওই গাছের তলায় খেলা করেছে তাদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এগুলি মুছে ফেলা সম্ভব নয়। তাই রাস্তার নকশা বদলে গাছের পাশ দিয়ে তা তৈরি হবে।”
সম্প্রতি এনএইচএআই ৪০০ বর্গমিটার গুঁড়ি প্রসারিত ওই বটগাছটি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ সেখানে রত্নাগিরি-শোলাপুর হাইওয়ে প্রকল্পের কাজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাস্তার ঠিক মাঝখানেই পড়ছিল প্রাচীন গাছটি। সেই সিদ্ধান্তের কথা স্থানীয় গ্রামবাসী ও পরিবেশবিদরা জানতে পেরেই প্রতিবাদে নামেন। চিপকো আন্দোলনের মতো এই গাছকেও জড়িয়ে ধরে আন্দোলন করতে থাকেন তাঁরা। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের কর্মী প্রবীণ শিণ্ডে বলেন, “আমার গাছটি বাঁচাতে এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও জড়ো হই। সকলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চিপকো আন্দোলনের মতো গাছটি আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতাম। রাজ্যের পরিবেশ মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রী নীতিন গড়করিকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি তাঁর নজরে আনেন। এরপরই মন্ত্রী তাঁর অফিসারদের গাছ না কাটার নির্দেশ দেন।” সোশ্যাল মিডিয়াতেও ওই বটগাছ এবং আন্দোলনের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওয়ে দেখা যায়, বিশালাকার ওই গাছটিতে কত বাঁদর, পাখির বসবাস। তারা আশ্রয় হারাবে বলেও গাছ কাটার বিরোধিতা করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জীবপ্রেমীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.