সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নক্ষত্রের মুখোমুখি মানুষ। কিন্তু বহির্বিশ্বের দিকে তাকাতে গিয়ে নিজেদের নীল গ্রহটাকে বিপদের মুখে ফেলছে না তো মানব সভ্যতা? পৃথিবীর চারপাশে বেড়ে চলেছে ই-আবর্জনা। আর তার জেরেই বাড়ছে আশঙ্কা। কেবল ২০২৪ সালেই ১২০০টি বস্তু মহাকাশ থেকে খসে পড়েছে পৃথিবীতে। অদূর ভবিষ্যতে বড়সড় বিপদ বাঁধবে না তো? ভয় বাড়ছে।
কী এই ই-আবর্জনা? তালিকাটা দীর্ঘ। অকেজো কৃত্রিম উপগ্রহ, রকেটের পরিত্যক্ত অংশ, মিশন-সংক্রান্ত আবর্জনা (লেন্স ক্যাপ বা সেপারেশন বোল্ট জাতীয় যন্ত্রপাতি), মহাকাশে মানুষ প্রেরিত বস্তুগুলির মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের ফলে তৈরি হওয়া যন্ত্রাংশ ইত্যাদি। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি প্রতি বছর একটি করে মহাকাশ-পরিবেশ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে। যা থেকে ছবিটা পরিষ্কার হচ্ছে। ২০২৫ সালের রিপোর্ট কিন্তু ভয় ধরাচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্য সাজিয়েই এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, মহাকাশে অন্তত ৪০ হাজার বস্তু ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদিও সংখ্যাটা আরও বেশি বলেই অনুমান করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ১ সেমির বেশি আকারের বস্তুরই পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে বিপদ হতে পারে। ১২ লক্ষের বেশি মহাকাশ-বর্জ্য জমেছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিতকারী টুল MASTER দেখাচ্ছে প্রায় সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার উচ্চতার মধ্যে ঘুরে বেড়ানো ই-বর্জ্যগুলি সক্রিয় কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গেই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। ফলে যখন তখন বড়সড় সংঘর্ষের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর এর সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। কেবল ২০২৪ সালেই অন্তত হাজার তিনেক বেশি ই-বর্জ্যকে ঘুরপাক খেতে দেখা গিয়েছে। কেবল পৃথিবীতে আছড়ে পড়াই নয়, মহাকাশযানের সঙ্গে তাদের ধাক্কা লাগার আশঙ্কা মহাকাশ অভিযানের নিরাপত্তা হ্রাস করছে। পৃথিবীর কক্ষপথের দূষণ এবং মহাকাশ পরিবেশের অবনতির দিকটিও এড়িয়ে গেলে হবে না। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ প্রযুক্তির মতো অত্যাধুনিক ব্যবস্থা। এখন দেখার, শেষপর্যন্ত এই বর্জ্যের মোকাবিলায় কতটা সফল হবেন বিজ্ঞানীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.