সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের দাপটে কাঁপছে গোটা মানবজাতি।বিজ্ঞানের জয়রথ থামিয়ে দিয়েছে একটি অণুবীক্ষণিক জীব। তবে এর ফলে নিজেকে অনেকটাই ‘বিষমুক্ত’ করতে পেরেছে প্রকৃতি। স্বচ্ছ রূপ ফিরে পাচ্ছে নদী, পাহাড়।স্বাভাবিকভাবেই, পর্বতারোহীদের জোয়ারে ভাটা পড়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে মাউন্ট এভারেস্ট।
গত পাঁচ বছরে এই দ্বিতীয়বার হিমালয় পর্বতমালার শৃঙ্গগুলিতে ফিরেছে শান্তি। করোনা ভাইরাসের হামলায় জর্জরিত হয়ে ১১ মার্চ থেকে তিব্বত হয়ে এভারেস্ট অভিযান বন্ধ করে দিয়েছে চিন। তার পরদিনই রুট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল সরকারও। ফলে উৎসুক ও এডভেঞ্চার প্রিয় পর্বতারোহীদের কাছে আপাতত সরঞ্জাম গুটিয়ে ফেলা ছাড়া কোনও পথ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিযান বন্ধ হওয়ায় অনেকটাই স্বস্তির বিশ্বাস ফেলেছে গিরিরাজ হিমালয়। বিশেষ করে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে মাউন্ট এভারেস্ট। আধুনিক সরঞ্জামের দৌলতে আজ আর জর্জ মেলোরি বা অ্যাণ্ড্র ইরভাইনের মতো পদে পদে মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হয় না। ফলে সামিট করার ভিড় লাগাতার বাড়ছে। বেসক্যাম্প থেকে এভারেস্ট পর্যন্ত খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার, খাবারের প্যাকেট ও অন্যান্য বর্জ্য ক্রমেই বাড়ছিল। হিমালয়ে প্রতিবছর পর্যটকদের নিয়ে আসেন রাশিয়ান গাইড জেন মারকোভা। তাঁর কথায়, করোনার জেরে ব্যবসায় ক্ষতি কিছু হয়েছে। তবে এটা জরুরি ছিল। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে নিজেকে অনেকটাই বিষমুক্ত করতে পারবে হিমালয়।
এদিকে, অভিযান বন্ধ থাকায় রীতিমতো বেকায়দায় পড়েছে শেরপারা। পর্বতারোহণের জন্য বছরে তিনটি মরসুম– এপ্রিল, মে ও নভেম্বর। প্রতি মরশুমে ঠিকঠাক কাজ পেলে গড়ে একজন শেরপার আয় তিন লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা। এতেই চলে গোটা বছরের খরচ। তবে এবারে আয় বন্ধ তাঁদের। সদ্য সংবাদমাধ্যমে বিখ্যাত পর্বতরোহী ফুরবা তাশি শেরপা বলেন, ‘হিমালয়ে করোনা হামলা চালালে ফল ভয়ানক হবে। এভারেস্ট আমাদের অন্নদাতা, এবার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তবে লকডাউন সঠিক সিদ্ধান্ত।’ উল্লেখ্য, একুশবার এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখেছেন তিনি। কোনও বিপদকে পরোয়া করেননি। শেরপারা এমনই হয়। তবে তুষার ঝড়ের চাইতেও পেটের আগুন বেশি ভয়ানক বলেই হয়তো এবার আতঙ্কিত তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.