সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমুদ্রের তলদেশে ডুব দিয়ে অরূপরতন খুঁজে পাওয়া৷ লাল, নীল – কত রঙের, কত আকারের সব সামুদ্রিক প্রাণী৷ জলজগতের সেই রূপ দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার জোগাড়৷ গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ৷ নাম শুনলেই ভেসে ওঠে প্রবালের সারি৷ সেই প্রবাল জগতের বিপন্নতা আজ নতুন কিছু নয়৷ সাম্প্রতিক গবেষণা আরও ভয়ংকর তথ্য দিচ্ছে৷ জানা গিয়েছে, সমুদ্রের জলতলের উষ্ণতাবৃদ্ধি প্রবালের মৃত্যুর কারণ৷ রক্তাভ প্রবাল এখন ধূসর৷ অধিকাংশ প্রবাল মরে যাচ্ছে৷
সম্প্রতি সমুদ্র নিয়ে নতুন একটি গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশ করেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা৷ গবেষকদলের প্রধান ট্রেসি আইন্সওয়ার্থ জানাচ্ছেন, ‘এই টিমের বিজ্ঞানীরা সকলেই এক দশকের বেশি সময় ধরে শুধু প্রবালের উপরই গবেষণা করেছেন৷ তাই প্রবালদের ওরকম কঙ্কালসার চেহারা দেখে ওনারা আঁতকে উঠেছেন৷ খুব দ্রুতই এই পরিবর্তন ঘটে গেছে৷ প্রবালগুলোর মৃত্যুর পর ধূসর চেহারা থেকে তা কঙ্কাল হয়ে গিয়েছে৷’ এই রিপোর্ট দেখে ব্রিটেনের সমুদ্রবিজ্ঞানী লরা রিচার্ডসনের মন্তব্য, ‘উষ্ণতার দাপটই প্রবাল প্রাচীরের এত দ্রুত ধ্বংসের কারণ৷ এগুলোকে ভূতুড়ে প্রবাল বলে আমরা চিহ্নিত করছি৷’
জানা গিয়েছে, গত ১০ দিন ধরে মৃত প্রবালগুলিকে জলের উপরে ভাসতে দেখা গিয়েছে৷ গবেষকরা বলছেন, এভাবে প্রবাল প্রাচীরের মৃত্যু গোটা সমুদ্র জগতেই ব্যাপক প্রভাব পড়ছে৷ নিউ ক্যাসলের অধ্যাপক বিল লেগাট বলছেন, উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের তলদেশে যে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে, তা কিন্তু স্থলভূমির তুলনায় অনেকটাই বেশি, যা হয়ত আমরা ভাবতেও পারছি না৷ বলা হচ্ছে, এভাবে বিশ্বজুড়ে প্রবাল প্রাচীর ধ্বংসের মুখে এগিয়ে গেলে প্রকৃতির একটা বিরাট অংশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে৷
রিপোর্ট দেখে অনেকেই বলছেন, বিভিন্ন পরিবেশ সম্মেলনে যেমন প্রকৃতিকে বাঁচানোর জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়, তেমনই এবার সমুদ্রের দিকে তাকানোর প্রয়োজন আছে৷ এর জন্য আলাদাভাবে সম্মেলন এবং পরিকল্পনা তৈরি হোক৷ সমুদ্রপ্রাণ বাঁচিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখতে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে নীতি নির্ধারণ করার দাবি উঠছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.