সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে বাড়ছে গরমের দাপট। অন্যদিকে উষ্ণায়নের ছোবলে হু হু করে গলছে বরফ। জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পশ্চিমে। আল্পসে (Alps) এটা বরফ গলার সময় হলেও এবার বরফ গলছে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। গত ৬০ বছর ধরে এই বরফ গলার হিসেব রাখা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সাল সব নজির ভেঙে দিয়েছে!
প্রতি বছর কী পরিমাণ বরফ গলছে ও কী পরিমাণ তুষারপাত শীতের সময় হচ্ছে, তার হিসেব রাখা হয়। এর মাধ্যমে দেখা হয় প্রতি বছর একটি হিমবাহ কী পরিমাণে সঙ্কুচিত হচ্ছে। গত শীত থেকেই তুষারপাতের পরিমাণ কমে গিয়েছে এই অঞ্চলে। এদিকে আল্পস দ্রুত গলতে শুরু করেছে। শেষ দু’বারের গ্রীষ্মে রীতিমতো তাপপ্রবাহ দেখা গিয়েছে এখানে। এই পার্বত্য এলাকাতেও জুলাইয়ে তাপমাত্রা প্রায় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে ছুঁয়ে ফেলেছে। যা অভাবনীয়।
এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই কপালে ভাঁজ পরিবেশবিদদের। সুইডেনের হিমবাহ বিশারদ আন্দ্রেজ লিন্সবায়ের জানাচ্ছেন, ”এবারের মরশুম সত্য়িই চরমভাবাপন্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।” এমনিতে হিমযুগ শেষ হওয়ার পর থেকেই জলবায়ুর পরিবর্তনের ধাক্কায় প্রতি বছরই বরফ গলে সারা বিশ্বের হিমবাহগুলির। কিন্তু আল্পসের ক্ষেত্রে বিষয়টি বেশি আশঙ্কাজনক। কেননা গত এক দশকে ০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে তাপমাত্রা বেড়েছে, যা সারা বিশ্বের গড় হিসেবের দ্বিগুণ!
আর এই হিসেব ভয় দেখাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, যদি গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ এইভাবেই চলতে থাকে তাহলে ২১০০ সালের মধ্যেই আল্পস প্রায় ৮০ শতাংশ ভর হারিয়ে ফেলবে। হিমবাহের গলনের এই আশঙ্কা উষ্ণায়নের কুফল হিসেবে ক্রমেই ভয় দেখাচ্ছে। গত মাসেই ইটালির মারমোলাডায় একটি হিমবাহ ভেঙে পড়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়।
একই ভাবে নজরে রাখা হচ্ছে হিমালয়ের হিমবাহের দিকেও। এবছর সেখানেও রেকর্ড হারে বরফ গলেছে। সংবাদ সংস্থাকে তেমনই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কাশ্মীর অঞ্চলে গ্রীষ্মের মরশুম শুরু হলেই বহু হিমবাহ গলতে শুরু করে। এবারও হিমবাহগুলি দ্রুত গলতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে আতঙ্কের ছবি ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.