সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহু কারণে বাকি বিশ্বের কাছে আজও রহস্যময় চিন (China)। রহস্য বজায় রাখার ব্যবস্থা করে সেদেশের সরকার। যেমন, চিনে রয়েছে নিযস্ব সোশ্যাল মিডিয়া। ফলে সেখানকার মানুষের ভাল লাগা-মন্দ লাগার কথা জানতে পারে না অন্যরা। অভিযোগ, মাঝেমাঝেই নাগরিকদের মতামত ছাড়াই চিনা প্রশাসন এমন সব ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়, যা এককথায় অমানবিক। তেমনই একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এল এবার। মার্কিন জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দাবি করা হল, আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণার আগেই চিনে কমপক্ষে ৭১ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দির একাধিক অঙ্গ কেটে নেওয়া হয়েছে, তা অন্যদের শরীরে প্রতিস্থাপনের (Organ Transplantation) জন্যে। আর সেটাই ওই জেলবন্দিদের মৃত্যুর কারণ। অর্থাৎ কিনা জেলবন্দিদের সঙ্গে গিনিপিগের মতো ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
অ্যামেরিকান জার্নাল অফ ট্রান্সপ্লান্টেশনে প্রকাশিত চাঞ্চল্যকর ওই সমীক্ষার প্রতিবেদনের লেখক অস্ট্রেলিয়ার গবেষক ড. ম্যাথু রবার্টসন ও ইজরায়েলের অঙ্গ প্রতিস্থাপনে বিশেষজ্ঞ সার্জেন ডাঃ জেকব ল্যাভি। দুই গবেষক জানিয়েছেন, ১৯৮০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে এমন ৭১টি চিনা মেডিক্যাল জার্নাল প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে জেলবন্দিদের মৃত্যুর কারণ আসলে অঙ্গ কেটে নেওয়া। যা চিকিৎসার কারণে ‘কারও ক্ষতি যেন না হয়’, এই হিপোক্রেটিক শপথের বিরোধী।
মার্কিন জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে, দুই গবেষক শুরুতে মোট ১২৪, ৭৭০টি তথ্য ঘেঁটে দেখেন। যেগুলি প্রকাশিত হয় ১৯৫১ থেক ২০২০ সালের মধ্যে। এরপরেই এমন ৭১টি ঘটনার কথা তাঁরা জানতে পারেন, যেখানে চিকিৎসা পদ্ধতি অনুযায়ী রোগীর মৃত্যু নিশ্চিত করার আগেই অঙ্গ কেটে নেওয়া হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, সেই কারণেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
ওই গবেষকরা দাবি করেন, “আমরা এমন ৭১টি ঘটনার কথা উল্লেখ্য করতে পারি, যেখানে নিয়ম মেনে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয়নি। প্রতিস্থাপনের জন্য অঙ্গ কেটে নেওয়ার ফলেই রোগীদের মৃত্যু হয়েছে।” দুই গবেষক আরও জানিয়েছেন, বেআইনি অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চিনের ৫৬টি হাসপাতাল। এর সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স-সহ ৩০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রকাশিত চাঞ্চল্যকর সমীক্ষায় এও জানানো হয়েছে যে, চিনে সবচেয়ে বেশি অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়ে থাকে। তা নিয়ে তারা গর্বিতও। যদিও তার অন্যতম উৎস অসহায় জেলবন্দিরা। বেআইনিভাবে তাদের অঙ্গকে কাজে লাগাচ্ছে অমানবিক চিকিৎসকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.