সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রযুক্তি এগোচ্ছে জেটগতিতে। মাটির উপরেই শুধু নয়, পাতাল থেকে আকাশ – সর্বত্রই ঘটে চলেছে বৈপ্লবিক সব কাণ্ড-কারখানা। সবই প্রযুক্তির দান। তবে এমনটাও যে ঘটবে কখনও, কেউ বোধহয় এতটা আশা করতে পারেননি। এমনকী যাঁরা মেধা, পরিশ্রম, প্রযুক্তি – সবটুকু দিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তাঁরাও এতটা সফল হবেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। যদিও সেইসব সন্দেহ কাটিয়ে দিল লঙ্কা। কী ভাবছেন? লঙ্কার কী ভূমিকা এতে? উত্তর তাহলে দেওয়া যাক। মহাকাশ স্টেশনে ফলল লঙ্কা (Chilli peppers)। হ্যাঁ, যা পড়ছেন, সেটাই খাঁটি সত্যি। শূন্য মহাকর্ষেও (Zero gravitaion)দিব্যি হয়ে গেল লঙ্কাচাষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাষের জগতে এভাবে লঙ্কা উৎপাদন নতুন বিপ্লবের সূচনা করল।
এবার প্রশ্ন হল, কেন ট্রায়ালের জন্য লঙ্কাকেই বেছে নিলেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা? এর কয়েকটি কারণ আছে। প্রথমত, লঙ্কা ভিটামিন সি (Vitamin C) সমৃদ্ধ। মহাশূন্যে দিনের পর দিন ভেসে থাকতে হলে ভিটামিন সি শরীরে গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজনীয়। তাই সহজে তা পেতে লঙ্কাচাষের উদ্যোগ। দ্বিতীয়ত, লঙ্কার পরাগমিলনের জন্য কোনও বাহ্যিক অনুঘটক প্রয়োজন হয় না। তাই একবার তা ফলাতে পারলে, আর উৎপাদন নিয়ে ভাবতে হবে না। তবে যে স্থানে কোনও শূন্য আকর্ষণ বল ছাড়া এভাবে ফসল ফলানোটা খুবই কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল কৃষিবিজ্ঞানীদের কাছে। সেই কঠিন কাজটাই দিব্যি সফলভাবে করে ফেললেন। নাসাও জানিয়েছে, এই কাজ অন্যতম বড় কঠিন কাজ ছিল।
সেই সাফল্যের হাতেগরম প্রমাণ মহাকাশ স্টেশন (International Space Station) থেকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরলেন বিজ্ঞানী মার্ক টি ভ্যানডে। লঙ্কার নানা প্রজাতি নিয়ে বিজ্ঞানীরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা চালিয়েছেন, কোনটি মহাকাশে চাষের জন্য উপযুক্ত। পরীক্ষানিরীক্ষার পর শেষপর্যন্ত নিউ মেক্সিকোর হ্যাচ (Hatch)নামে সবুজ লঙ্কাটিকেই বেছে নেওয়া হয়। তারপর এই লঙ্কাচাষে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেন বিজ্ঞানীরা। তারপর মহাকাশ স্টেশনে হ্যাচ লঙ্কা ফলনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় শূন্য মহাকর্ষজ বল। সেসব বাধাবিপত্তি কাটিয়েই মাটিতে পোঁতা বীজ থেকে শেষমেশ কচি সবুজ লঙ্কা উঁকি দেয়। মাটিভরতি পাত্র মহাকাশ স্টেশন পৌঁছে দিয়েছিল Space X’এর কার্গো শিপ। তারপর যা ঘটল, তা বিপ্লব ছাড়া আর কী-ই বা?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.