সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চরম দাবদাহ, প্রবল তাপপ্রবাহে জর্জরিত কানাডা, আমেরিকা। গত ৬ দিনে শুধুমাত্র কানাডার (Canada) ভ্যাঙ্কুভারেই তীব্র গরমের দাপটে মৃত্যু হয়েছে দেড় শতাধিক বাসিন্দার। আচমকা উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় সেই ধাক্কা সইতে না পেরে আচমকাই হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাঁদের। আমেরিকার (USA) বিস্তীর্ণ অংশও এই তাপপ্রবাহের যন্ত্রণায় জর্জরিত। কিন্তু কেন তাপমাত্রার এই খামখেয়ালিপনা? বিশ্ব উষ্ণায়নের (Global warming) জের নাকি রয়েছে অন্য কোনও কারণ? পরিস্থিতি বুঝতে রীতিমতো গবেষণায় নেমেছেন আবহবিদরা। কানাডার আবহাওয়া দপ্তরের তরফে তার ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে।
আবহবিদদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের উপর তৈরি হয়েছে বিশালাকার উষ্ণ বলয় (Heat Dome)। তা ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। আর সেখান থেকেই তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়ছে। প্রকৃতির সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, কোথাও এ ধরনের উচ্চচাপ তৈরি হলে, ধীরে ধীরে নিম্নচাপের দিকে সরে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে উচ্চচাপ বলয়টি আরও ঘনীভূত হচ্ছে, অর্থাৎ আরও উষ্ণ বায়ু জমা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উষ্ণায়নের কারণে বায়ুস্তরের ওজোন স্তর ক্রমশ পাতলা হচ্ছে। তার সুরক্ষা বলয় ভেদ করে সহজেই জমা হচ্ছে গ্রিনহাউস গ্যাস (Green house gas)। এর জেরে চড়চড়িয়ে উষ্ণতা বাড়ছে আর তা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে ব্রিটিশ কলম্বিয়া এলাকায়। অন্যদিকে, উত্তর আটলান্টিক সাগরে ঘনীভূত উষ্ণ বলয়ের প্রভাব পড়েছে সংলগ্ন গ্রিনল্যান্ডের একাংশেও। বরফঢাকা গ্রিনল্যান্ডে (Greenland) গলছে হিমবাহের চাদর। এভাবে রোজ তাপমাত্রা বৃদ্ধি সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে বলে পর্যবেক্ষণ বিশেষজ্ঞদের।
কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের লিটন তাপপ্রবাহে সর্বাধিক বিধ্বস্ত। এই শহর পূর্ব ভ্যাঙ্কুভার থেকে ১৫৫ কিলোমিটার দূরে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত লিটনের তাপমাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছে এবং তার জেরে যেভাবে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, সুরক্ষার স্বার্থে গ্রামটি ফাঁকা করা হচ্ছে বলে খবর। স্থানীয় পুলিশ সার্জেন্ট স্টিভ অ্যাডিসনের বক্তব্য, “এ ধরনের অভাবনীয় তাপমাত্রা ভ্যাঙ্কুভারে আগে দেখা যায়নি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বহু মানুষ এই তাপ সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন।” একই বক্তব্য ভ্যাঙ্কুভারের স্থানীয় মানুষজনও। রোসা নামের এক মহিলা জানিয়েছেন, “এতটা খারাপ পরিস্থিতি আগে দেখিনি। আশা করি, পরিস্থিতি যেন দ্রুত স্বাভাবিক হয়। এরকম যেন আর কখনও না হয়।” আবার পেশায় সাঁতারু, গ্রাহাম গ্রিজারের মন্তব্য, “আমার কষ্ট হচ্ছে বয়স্ক মানুষদের কথা ভেবে। আর যাঁরা ভ্যাঙ্কুভারের পূর্ব অংশে থাকেন, তাঁদের অবস্থাও দুর্বিসহ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.