দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সুদূর ইংল্যান্ড থেকে এসেছেন সুন্দরবনে। তাও আবার মোটরসাইকেল নিয়ে। মার্ক পিটার, ডেভিড ক্যামেরুন-সহ কুড়ি জনের একটি দল। সুন্দরবনের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখলেন মোটরসাইকেল নিয়ে। উপভোগ করলেন সুন্দরবনের সুন্দরীকে। আর তারপর ঝড়-বৃষ্টির সর্তকতা থাকায় তড়িঘড়ি ফিরে গেলেন দেশের উদ্দেশে।
না এরা কেউ পর্যটক নন। এরা হলেন পরিবেশ কর্মী। সুন্দরবনের পরিবেশের টানে তাঁরা চলে এসেছেন শুধু ইংল্যান্ড থেকে। বাইক নিয়ে কয়েক হাজার মাইল অতিক্রম করে শুক্রবার সুন্দরবন ছাড়েন তাঁরা।
গত ৬ অক্টোবর তাঁরা ইংল্যান্ড থেকে রওনা হন। এরপর বাইকে চেপে বিভিন্ন দেশ ঘুরে তাঁরা পৌঁছন ভারতবর্ষে। সেখানে এসে প্রথমে দিল্লি তারপর কলকাতায় আসেন। কলকাতায় বিট্রিশ দূতাবাসে যোগাযোগ করে সোজা সুন্দরবনে।
গত চারদিন ধরে তাঁরা সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপ এবং তার অলিগলি চষে বেরিয়েছেন মোটরসাইকেল নিয়ে। শুক্রবারে দেখা গেল গদখালি ঘাটে সেই বাইকগুলিকে নৌকার করে পার করাতে। গোসাবা থেকে বিভিন্ন দ্বীপ পেরোতে এবং নদী পারাপারের জন্য তাঁদের নিতে হয়েছে বিভিন্ন নৌকার সাহায্য। কারণ, সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপে এখনও যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হল এই নৌকা।
এপ্রসঙ্গে ওই দলে থাকা মার্ক বুচার বলেন, ‘আমরা এর আগেও হিমালয় অভিযান করেছিলাম। এবার সুন্দরবন অভিযান করলাম। খুব শীঘ্রই আমরা আমাজন অভিযান করব। সুন্দরবনের পরিবেশ গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ফলে ধ্বংসের মুখে। এর ফলে এখানকার মানুষের সঙ্গে সঙ্গে সমস্যায় পড়ছে জীবজন্তু ও পরিবেশ। অতিসম্প্রতি আমাজনে যেভাবে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে তাতে দেখা গেছে সেখানকার প্রাণীদের কী ভয়ংকর অবস্থা। তাই আমরা সেখানকার পরিবেশ নিয়ে বার্তা দিতে এবং বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমরা খুব শিগগিরই আমাজনে যাব।’
তিনি আরও জানান, ইংল্যান্ড থেকে আসার পরে ভুলেই গিয়েছিলেন যে তাঁরা ইংল্যান্ডে নয় ভারতে আছেন। কারণ সুন্দরবনের প্রতিটি দ্বীপে বহু মানুষ তাঁদের আন্তরিক অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। বিভিন্ন বাড়িতে থাকতেও দিয়েছেন। তবে তাঁরাও পর্যটকদের মতো বাঘ বা হরিণ দেখার জন্য ঘুরে বেড়াননি। বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে কথা বলেছেন মানুষের সঙ্গে, একসঙ্গে খেয়েছেন মাটির বাড়িতে বসে, থেকেছেন কুঁড়েঘরে। একসঙ্গে কুড়ি জন বিদেশির মোটরসাইকেলে করে সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপে ঘুরে বেড়ানোর ছবি নজর কেড়েছে স্থানীয়দের। বহু মানুষ উৎসাহ নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন তাঁদের দেখার জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.